ঢাকা ০৬:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যৌন অপরাধ ঠেকাবে নারী পুলিশ

অাকাশ আর্ন্তজাতিক ডেস্ক:

ভারতের বিগত কয়েক বছর ধরে যৌন অপরাধ ব্যাপকহারে বেড়ে গেছে। তাই এবার যৌন অপরাধ ঠেকাতে মাঠে নামানো হয়েছে নারী পুলিশ সদস্যদের। রক্ষণশীল উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের পুরুষ নিয়ন্ত্রিত পুলিশ বাহিনীতে নারী পুলিশ ইউনিটগুলো মাঠ পর্যায়ে তাদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে। তারা যৌন অপরাধ ঠেকাতে তৎপরতা চালাচ্ছে এবং এর পাশাপাশি পরিবারের সম্মান বাঁচাতে ধর্ষিতাদের নীরব থাকার যে সংস্কৃতি রয়েছে তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। খবর এএফপি’র।

জয়পুরে নারী পুলিশ সদস্যদের এ ধরনের একটি স্কোয়াড বাসস্টপ, কলেজ ও পার্কগুলোতে টহল দিচ্ছে। এই স্থানগুলো নারীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এ ধরনের স্থানেই নারীরা অধিকাংশ যৌন অপরাধের শিকার হয়।নারীরা ভারতের রাস্তাগুলোতে সন্ধ্যার সময় বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা ও বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়। বখাটেরা তাদের লক্ষ্য করে নোংরা কৌতুক থেকে শুরু করে তাদের পিছুও নেয়। প্রায়ই নারীদের ইভটিজিংয়ের সম্মুখীন হতে হয়। মাঝে মাঝে শারীরিক নির্যাতন ও ধর্ষণের মতো ঘটনাও ঘটে।

নারী পুলিশ কর্মকর্তা কমল শেখাওয়াত বলেন, ‘আমরা তাদের কাছে যে বার্তা পাঠাতে চাচ্ছি তা হলো নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধকে একেবারেই বরদাস্ত করা হবে না।’ ভারতের পুলিশ বিভাগের সদস্যদের সিংহভাগই পুরুষ। বাহিনীতে নারী সদস্যের সংখ্যা খুবই নগণ্য, শতকরা মাত্র সাত ভাগ।

নির্যাতিতরা অভিযোগ করেন, তাদেরকে তাদের পোশাক ও আর্থিক অবস্থার মানদণ্ডের বিচার করা হয়, পুরুষ কর্মকর্তারা তাদেরকে বিব্রতকর প্রশ্ন করে। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে ঘৃণিত এই অপরাধটি করার জন্য অপরাধীকে উৎসাহিত বা উসকানি দেয়ার অভিযোগও আনা হয়।

কমল আশা করছেন, জয়পুরে এই নারী কর্মকর্তাদের উপস্থিতি আরো অধিক সংখ্যক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ দাখিল করতে উৎসাহিত করবে।তিনি বলেন, ‘নারী পুলিশ সদস্যরা এই ধরনের নির্যাতিতাদের প্রতি বেশি সহানুভূতিশীল। ধর্ষিতারাও তাদের কাছে খোলাখুলিভাবে নিঃসংকোচে তাদের ওপর হওয়া নির্যাতনের কথা বিস্তারিতভাবে বলতে পারবেন।’

জয়পুর পার্কে দায়িত্বরত কনস্টেবল সরোজ চৌধুরী ও তার সহকর্মীরা কয়েক মাসের মার্শাল আর্টের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এ সময় তারা আইনের ওপরও পড়াশুনা করেন। শুধু মাত্র একটি ফোন কল পেলে কিভাবে সাহায্য প্রার্থীকে সহায়তা করতে হয় সে ব্যাপারেও তাদেরকে যথাযথ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।

২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে নয়াদিল্লীতে এক মেডিকেল শিক্ষার্থী গণধর্ষিত হওয়ার পর মারা গেলে ভারতে নারীদের ওপর সহিংসতার মাত্রা নির্ণয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো গবেষণা ও নিরীক্ষা শুরু করে। ওই ঘটনার পর বিশ্বব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্য ও নিন্দার ঝড় ওঠে। ভারত সরকার ধর্ষণকারীদের বিরুদ্ধে আইন কঠোর করে। কিন্তু এরপর ধর্ষণের মাত্রা যেন আরো বেড়ে যায়। ২০১৫ সালে শুধু রাজধানী দিল্লীতেই ২ হাজার ১৯৯ টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। গড়ে যা দিনে ছয়টি।

যৌন সংক্রান্ত অপরাধ তদন্ত ও এ ধরনের অপরাধ মোকাবেলায় অবহেলার অভিযোগে উত্তর প্রদেশের পুলিশকে ব্যাপক সমালোচনার শিকার হতে হয়।সেখানে নারী ও পুরুষ পুলিশ সদস্যরা ‘এন্টি রোমিও স্কোয়াড’ গঠন করে বিভিন্ন স্থানে টহল দিচ্ছে। তবে অবিবাহিত যুগলদের প্রতি কঠোর মনোভাবের কারণে স্কোয়াডটি সমালোচনার শিকার হয়েছে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বন্যার পানি কমার সাথে সাথে জলবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে

যৌন অপরাধ ঠেকাবে নারী পুলিশ

আপডেট সময় ০৯:১৮:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই ২০১৭

অাকাশ আর্ন্তজাতিক ডেস্ক:

ভারতের বিগত কয়েক বছর ধরে যৌন অপরাধ ব্যাপকহারে বেড়ে গেছে। তাই এবার যৌন অপরাধ ঠেকাতে মাঠে নামানো হয়েছে নারী পুলিশ সদস্যদের। রক্ষণশীল উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের পুরুষ নিয়ন্ত্রিত পুলিশ বাহিনীতে নারী পুলিশ ইউনিটগুলো মাঠ পর্যায়ে তাদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে। তারা যৌন অপরাধ ঠেকাতে তৎপরতা চালাচ্ছে এবং এর পাশাপাশি পরিবারের সম্মান বাঁচাতে ধর্ষিতাদের নীরব থাকার যে সংস্কৃতি রয়েছে তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। খবর এএফপি’র।

জয়পুরে নারী পুলিশ সদস্যদের এ ধরনের একটি স্কোয়াড বাসস্টপ, কলেজ ও পার্কগুলোতে টহল দিচ্ছে। এই স্থানগুলো নারীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এ ধরনের স্থানেই নারীরা অধিকাংশ যৌন অপরাধের শিকার হয়।নারীরা ভারতের রাস্তাগুলোতে সন্ধ্যার সময় বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা ও বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়। বখাটেরা তাদের লক্ষ্য করে নোংরা কৌতুক থেকে শুরু করে তাদের পিছুও নেয়। প্রায়ই নারীদের ইভটিজিংয়ের সম্মুখীন হতে হয়। মাঝে মাঝে শারীরিক নির্যাতন ও ধর্ষণের মতো ঘটনাও ঘটে।

নারী পুলিশ কর্মকর্তা কমল শেখাওয়াত বলেন, ‘আমরা তাদের কাছে যে বার্তা পাঠাতে চাচ্ছি তা হলো নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধকে একেবারেই বরদাস্ত করা হবে না।’ ভারতের পুলিশ বিভাগের সদস্যদের সিংহভাগই পুরুষ। বাহিনীতে নারী সদস্যের সংখ্যা খুবই নগণ্য, শতকরা মাত্র সাত ভাগ।

নির্যাতিতরা অভিযোগ করেন, তাদেরকে তাদের পোশাক ও আর্থিক অবস্থার মানদণ্ডের বিচার করা হয়, পুরুষ কর্মকর্তারা তাদেরকে বিব্রতকর প্রশ্ন করে। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে ঘৃণিত এই অপরাধটি করার জন্য অপরাধীকে উৎসাহিত বা উসকানি দেয়ার অভিযোগও আনা হয়।

কমল আশা করছেন, জয়পুরে এই নারী কর্মকর্তাদের উপস্থিতি আরো অধিক সংখ্যক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ দাখিল করতে উৎসাহিত করবে।তিনি বলেন, ‘নারী পুলিশ সদস্যরা এই ধরনের নির্যাতিতাদের প্রতি বেশি সহানুভূতিশীল। ধর্ষিতারাও তাদের কাছে খোলাখুলিভাবে নিঃসংকোচে তাদের ওপর হওয়া নির্যাতনের কথা বিস্তারিতভাবে বলতে পারবেন।’

জয়পুর পার্কে দায়িত্বরত কনস্টেবল সরোজ চৌধুরী ও তার সহকর্মীরা কয়েক মাসের মার্শাল আর্টের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এ সময় তারা আইনের ওপরও পড়াশুনা করেন। শুধু মাত্র একটি ফোন কল পেলে কিভাবে সাহায্য প্রার্থীকে সহায়তা করতে হয় সে ব্যাপারেও তাদেরকে যথাযথ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।

২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে নয়াদিল্লীতে এক মেডিকেল শিক্ষার্থী গণধর্ষিত হওয়ার পর মারা গেলে ভারতে নারীদের ওপর সহিংসতার মাত্রা নির্ণয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো গবেষণা ও নিরীক্ষা শুরু করে। ওই ঘটনার পর বিশ্বব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্য ও নিন্দার ঝড় ওঠে। ভারত সরকার ধর্ষণকারীদের বিরুদ্ধে আইন কঠোর করে। কিন্তু এরপর ধর্ষণের মাত্রা যেন আরো বেড়ে যায়। ২০১৫ সালে শুধু রাজধানী দিল্লীতেই ২ হাজার ১৯৯ টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। গড়ে যা দিনে ছয়টি।

যৌন সংক্রান্ত অপরাধ তদন্ত ও এ ধরনের অপরাধ মোকাবেলায় অবহেলার অভিযোগে উত্তর প্রদেশের পুলিশকে ব্যাপক সমালোচনার শিকার হতে হয়।সেখানে নারী ও পুরুষ পুলিশ সদস্যরা ‘এন্টি রোমিও স্কোয়াড’ গঠন করে বিভিন্ন স্থানে টহল দিচ্ছে। তবে অবিবাহিত যুগলদের প্রতি কঠোর মনোভাবের কারণে স্কোয়াডটি সমালোচনার শিকার হয়েছে।