অাকাশ জাতীয় ডেস্ক:
রাজধানীসহ সারা দেশে টানা বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার পর গত দুই সপ্তাহ থেকে রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রায় সব পণ্যের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। গত দুই সপ্তাহ আগে রাজধানীতে যে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ৩০ টাকায় দরে, আজকের বাজারে সেই পেঁয়াজই দ্বিগুণ বেড়ে কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে।
আজ শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুলসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। বাজারে সবজি, মাছসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ার জন্য অব্যাহত বৃষ্টিপাতকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে আজকের বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে। এর আগে গত দুই সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছিল ২০ টাকা। অর্থাৎ ৩ দফায় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৩০ টাকা।
এছাড়া আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ গত সপ্তাহে ১২ টাকা বৃদ্ধির পর আজকের বাজারে আবারও ১৫ টাকা বেড়েছে। অর্থাৎ গত সপ্তাহে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ আজকের বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা দরে।
এদিকে গত সপ্তাহের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে কাঁচা মরিচ। আজকের বাজারে কাঁচা মরিচ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা দরে। এছাড়া কেজি প্রতি দেশি রসুন ১০ টাকা বেড়ে ১১০ টাকা, ভারতীয় রসুন ১৩০ টাকা, আলু কেজিপ্রতি ২ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৪ টাকা দরে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, টানা বৃষ্টির কারণে আড়তে পেঁয়াজ, রসুন ও আলু সংরক্ষণে ব্যপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উৎপাদন পর্যায়ের কৃষকরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে এর প্রভাব পড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচে।
হাতিরপুল বাজারের ব্যবসায়ী আরিফ বলেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে টানা বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। কারণ পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাইকারি ব্যবসায়ীরা। দূর্যোগপূর্ণ এই অবস্থা চলতে থাকলে পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম আরও বেড়ে যাবে।
তবে গত সপ্তাহের দামেই স্থিতিশীল রয়েছে অধিকাংশ মুদি পণ্যের দাম। আজকের বাজারে কেজি প্রতি ছোলা ৮০ টাকা, দেশি মুগ ডাল ১৩০ টাকা, ভারতীয় মুগ ডাল ১২০ টাকা, মাসকলাই ১৩৫ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১২৫ টাকা, ভারতীয় মসুর ডাল ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দারুচিনি ৩৬০ টাকা, জিরা ৪৫০ টাকা, শুকনা মরিচ ২০০ টাকা, লবঙ্গ ১৫০০ টাকা, এলাচ ১৬০০ টাকা, চীনের আদা ১৪০ টাকা এবং ক্যারালা আদা ১১০ টাকা, হলুদ ১৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ভোজ্য তেলের দাম আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। আজকের বাজারে ব্র্যান্ড ভেদে ৫ লিটারের বোতল ৫৩০-৫৪০ টাকা, প্রতি লিটারে ১-২ টাকা বেড়ে ১০৭ টাকা থেকে ১০৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেগুন কেজি প্রতি ৬০-৮০ টাকা, শিম ১২০ টাকা, হাইব্রিড টমেটো ১৬০ টাকা, দেশি টমেটো ১০০ টাকা, শশা ৬০ টাকা, চাল কুমড়া ৫০-৫৫ টাকা, কচুর লতি ৬০-৬৫ টাকা, পটল ৫০-৫৫ টাকা, ঢেঁড়স ৫০-৫৫ টাকা, ঝিঙ্গা ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০-৫৫ টাকা, করলা ৫০-৫৫ টাকা, কাকরোল ৫০ টাকা, পেঁপে ৪০-৫০ টাকা, কচুরমুখী ৫০-৫৫ টাকা, আমড়া ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
প্রতিটি ফুলকপি ৩৫ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা এবং লেবু হালি প্রতি ২০ থেকে ৪০ টাকা, পালং শাক আঁটি প্রতি ২০ টাকা, লালশাক ২০ টাকা, পুঁইশাক ৩০ টাকা এবং লাউশাক ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মোটা স্বর্ণা চাল প্রতি কেজি ৪২-৪৩ টাকা, পারিজা চাল ৪২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মিনিকেট (ভালো মানের) ৫৪ টাকা, মিনিকেট (সাধারণ) ৫২ টাকা, বিআর-২৮ ৪৮ টাকা, সাধারণ মানের নাজিরশাইল ৫০ টাকা, উন্নত মানের নাজিরশাইল ৫২ টাকা, পাইজাম চাল ৪৮ টাকা, বাসমতি ৫৩ টাকা, কাটারিভোগ ৭২-৭৩ টাকা এবং পোলাও চাল (পুরাতন) ১০০ টাকা, (নতুন) ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আকার ভেদে প্রতি কেজি রুই মাছ ২৫০-৩৫০ টাকা, সরপুঁটি ৩৫০-৪৫০ টাকা, কাতলা ৩৫০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৮০ টাকা, সিলভার কার্প ২০০-২৫০ টাকা, চাষের কৈ ২৫০-৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাঙ্গাস প্রতি কেজি ১৫০-২৫০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা, মাগুর ৬০০-৮০০ টাকা, প্রকার ভেদে চিংড়ি ৪০০-৮০০ টাকা, প্রতিটি ইলিশ ৬০০-৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, প্রতি কেজি ইলিশের দাম রাখা হচ্ছে ১২০০ টাকা।
এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে ছোট দেশি মুরগির দাম আগের বাড়তি দামে প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা দরে। এছাড়া ব্রয়লার মুরগি ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। লেয়ার মুরগি ২২০ টাকা এবং পাকিস্তানি লাল মুরগি ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
আজকের বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।