অাকাশ আর্ন্তজাতিক ডেস্ক:
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে রাজনীতির ময়দানে ‘নবাগত’ আখ্যা দিয়ে ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি তাকে পরমাণু চুক্তির ব্যাপারে শ্রদ্ধাশীল হতে বলেছেন। তিনি হুঁশিয়ার করেছেন, চুক্তির বরখেলাপ করলে ট্রাম্প নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যতকে নিজেই ধ্বংস করবেন। তেহরান ও ছয় পরাশক্তির মধ্যে সম্পাদিত এই চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বাসভঙ্গকারী পক্ষ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন প্রেসিডেন্ট রুহানি।
২০১৩ সালে ইরানের ১১তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন হাসান রুহানি। এরপর চলতি বছরের মে মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আরেকবার দেশের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পান তিনি। গত বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনি রুহানিকে ইরানের ১২তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে অনুমোদন প্রদান করেন। শনিবার (৫ আগস্ট) আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ নেন রুহানি। তেহরানের পার্লামেন্ট ভবনে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে দেশের পদস্থ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি বিশ্বের অন্তত ১০০টি দেশ থেকে আসা রাজনীতিবিদরা অংশ নেন। শপথগ্রহণের পর এক ভাষণে রুহানি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত সমঝোতাকারী অন্য দেশগুলো ওই পারমাণবিক চুক্তির শর্ত মানবে ততক্ষণ পর্যন্ত ইরানও তা মেনে চলবে।
সম্প্রতি পারমাণবিক চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে বেশ কয়েকজন ইরানি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ইরান পারমাণবিক চুক্তির শর্ত মানছে বলে হোয়াইট হাউস থেকে স্বীকৃতি দেওয়া হলেও ট্রাম্প বরাবরই দেশটির বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলছেন। আর বরাবরই সে অভিযোগ নাকচ করে দিচ্ছে ইরান। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত ওই অনুষ্ঠানে রুহানি আরও বলেন, ‘বিশ্ব রাজনীতিতে নবাগতদের’ নিয়ে তার কিছু করার নেই। পারমাণবিক চুক্তি কিভাবে আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে বজায় রাখতে হবে তা জানতে পারমাণবিক চুক্তিকে দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখার জন্য ‘পুরনোদের’ প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
রুহানি বলেন, ‘যারা জেসিপিওএ (পারমাণবিক চুক্তি) কে খণ্ড-বিখণ্ড করতে চান তারা এর মধ্য দিয়ে তাদের রাজনৈতিক জীবনকেও তছনছ করে দেবেন।’
চুক্তির প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ‘অঙ্গীকারে ঘাটতি’ রয়েছে বলে ক্ষোভ জানান রুহানি। দেশটিকে ‘অবিশ্বস্ত অংশীদার’ হিসেবেও উল্লেখ করেন ইরানি প্রেসিডেন্ট।
গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ইরান মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা এবং সমৃদ্ধিকে ক্ষুণ্ন করছে। সিরিয়ার সরকার এবং হিজবুল্লাহ ও হামাসের মতো সংগঠনগুলোকে ইরান সমর্থন দিচ্ছে অভিযোগ করে এর সমালোচনা করা হয়। ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের সমর্থন দেওয়ার জন্যও ইরানের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র। অথচ এর একদিন আগে ইরান পারমাণবিক চুক্তির শর্তগুলো মেনে চলছে বলে হোয়াইট হাউস থেকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল।