ঢাকা ১০:৪৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিজেপির বিরুদ্ধে ভারত ছাড় আন্দোলনের ডাক মমতার

অাকাশ আর্ন্তজাতিক ডেস্ক:

ভারতের গরু রক্ষার নাম করে গো-রাক্ষদের তাণ্ডব চলছে। পাহাড় সমান দুর্নীতি ধামাচাপা দিতে পরিকল্পিত দাঙ্গা লাগানো হচ্ছে।এস অভিযোগে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির বিরুদ্ধে ‘ভারত ছাড়’ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।শুক্রবার রাজ্যের রাজধানী কলকাতার ধর্মতলায় অনুষ্ঠিত এক বিশাল সমাবেশ থেকে এ আন্দোলনের ঘোষণা দেন তিনি।

১৯৪২ সালের ৯ আগস্ট থেকে ঔপনিবেশিক ইংরেজের বিরুদ্ধে বিখ্যাত ‘ভারত ছাড়’ আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা মহাত্মা গান্ধী।এর ৭৫ বছর পর ভারতের অন্যতম প্রধান দল বিজেপির বিরুদ্ধে একই আন্দোলনের ডাক দিয়ে এর শুরুর দিন হিসেবে ৯ আগস্টকেই বেছে নিয়েছেন মমতা।

তিনি বলেন, ‌আগামী ৯ অগস্ট থেকে শুরু হবে বিজেপি ভারত ছাড়ো আন্দোলন। প্রতিটি জেলায় এই কর্মসূচি পালন করা হবে। সারা মাস ধরে এই কর্মসূচি চলবে। ৩০ আগস্ট পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে।এরপর প্রায় দুই মাস বিরতি দিয়ে নভেম্বর থেকে ফের আন্দোলন চলবে বলে জানান মমতা।

তিনি বলেন, বিজেপিকে হারাতে যা যা করার দরকার সব করতে হবে। ২০১৯ সালে এই রাজ্য থেকে বিজেপিকে একটিও আসন নিতে দেব না।শুক্রবারের জনাকীর্ণ সমাবেশে পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের ক্ষমতাসীণ বিজেপির কঠোর সমালোচনা করেন।

তিনি বলেন, গরু রক্ষার নামে গো-রাক্ষসের দলের তাণ্ডব চলছে। দুর্নীতি ধামাচাপা দিতে পরিকল্পনামাফিক অশান্তি পাকানো হচ্ছে। তিনি অভিযোগ করেন, পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে সব কিছু জ্বালিয়ে, পুড়িয়ে দিচ্ছে। মানুষের খাওয়া-পরাতেও বিধিনিষেধ আরোপ করছে বিজেপি সরকার। বসিরহাট-বাদুড়িয়ার দাঙ্গার প্রতি ইঙ্গিত করে বিজেপির বিরুদ্ধে মমতা বলেন, বাংলাদেশ কিংবা গুজরাটের অশান্তির ঘটনাকে পশ্চিমবঙ্গের বলে প্রচার করা হচ্ছে।

এসব অপপ্রচারের বিরুদ্ধে নিজদল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাকর্মীদের সামাজিক মাধ্যমে সরব হওয়ারও আহ্বান জানান সভানেত্রী মমতা।তিনি বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‌তৃণমূল হল প্রতিবাদের ভাষা। তাই সারদা-নারদ নিয়ে সিবিআই, ইডি, আয়কর দিয়ে ভয় দেখানো হচ্ছে। পরিকল্পনা করে নারদ কেলেঙ্কারি করা হয়েছে। আমি মনে করি না তৃণমূলের কেউ দোষী।পাঁচ বছর ধরে তদন্ত চললেও এখনও কিছুই প্রমাণিত হয়নি বলে জানান মমতা।

এসময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ২০১৯ সালে বড়দা (মোদি) বিদায় নেবেন।কেলেঙ্কারির তদন্ত করার ব্যাপারে পক্ষপাতের অভিযোগ করেন মমতা। তিনি বলেন, রাজস্থান, কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশে একের পর এক কেলেঙ্কারি রয়েছে। তখন সিবিআই, ইডি সব ঘুমিয়ে পড়ল।দুর্নীতির অর্থ বাজেয়াপ্তের নামের বড়সর দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, নোটবন্দির নামে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। তার জবাব কে দেবে? চোরের মায়ের বড় গলা।

তিনি আরও বলেন, তৃণমূলের মধ্যে যা স্বচ্ছতা আছে তা অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের নেই। আমি চ্যালেঞ্জ করছি এর শেষ দেখে ছাড়ব। যদি সঠিক পথে তদন্ত না হয় তাহলে আমরাও হাজার হাজার কোটি টাকার মানহানির মামলা করব।সমাবেশে বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে দেশব্যাপী বিরোধী জোট গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথা বলেন মমতা।

তিনি বলেন, ভারতের অখণ্ডতা রক্ষা করতে পশ্চিমবঙ্গই পথ দেখাবে। সোনিয়া গান্ধী, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, নীতীশ কুমার, লালুপ্রসাদ যাদবসহ সব বিরোধীদের পাশে আছে তৃণমূল। বিজেপির বিরুদ্ধে যারাই লড়াই করবে তাদের পাশে থাকবে তৃণমূল। বিনিময়ে আমার কিছু চাই না।বিজেপির বিরুদ্ধে বিরোধী জোট ক্রমেই ভালো করবে বলে সমাবেশে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভাল ফল হয়েছে। উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ফলাফল আরও বাড়বে। আর ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে ৩০ শতাংশও ভোট বিজেপি। তার জন্য লাগাতার রাজনৈতিক কর্মসূচি নিতে হবে।বিজেপিকে ধূলিস্যাৎ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, পঞ্চায়েত, পৌরসভা নির্বাচনে ওদের বোল্ড আউট করতে হবে। যাতে আর লড়াই করার সাহস দেখাতে না পারে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বন্যার পানি কমার সাথে সাথে জলবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে

বিজেপির বিরুদ্ধে ভারত ছাড় আন্দোলনের ডাক মমতার

আপডেট সময় ১১:৩৫:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ জুলাই ২০১৭

অাকাশ আর্ন্তজাতিক ডেস্ক:

ভারতের গরু রক্ষার নাম করে গো-রাক্ষদের তাণ্ডব চলছে। পাহাড় সমান দুর্নীতি ধামাচাপা দিতে পরিকল্পিত দাঙ্গা লাগানো হচ্ছে।এস অভিযোগে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির বিরুদ্ধে ‘ভারত ছাড়’ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।শুক্রবার রাজ্যের রাজধানী কলকাতার ধর্মতলায় অনুষ্ঠিত এক বিশাল সমাবেশ থেকে এ আন্দোলনের ঘোষণা দেন তিনি।

১৯৪২ সালের ৯ আগস্ট থেকে ঔপনিবেশিক ইংরেজের বিরুদ্ধে বিখ্যাত ‘ভারত ছাড়’ আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা মহাত্মা গান্ধী।এর ৭৫ বছর পর ভারতের অন্যতম প্রধান দল বিজেপির বিরুদ্ধে একই আন্দোলনের ডাক দিয়ে এর শুরুর দিন হিসেবে ৯ আগস্টকেই বেছে নিয়েছেন মমতা।

তিনি বলেন, ‌আগামী ৯ অগস্ট থেকে শুরু হবে বিজেপি ভারত ছাড়ো আন্দোলন। প্রতিটি জেলায় এই কর্মসূচি পালন করা হবে। সারা মাস ধরে এই কর্মসূচি চলবে। ৩০ আগস্ট পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে।এরপর প্রায় দুই মাস বিরতি দিয়ে নভেম্বর থেকে ফের আন্দোলন চলবে বলে জানান মমতা।

তিনি বলেন, বিজেপিকে হারাতে যা যা করার দরকার সব করতে হবে। ২০১৯ সালে এই রাজ্য থেকে বিজেপিকে একটিও আসন নিতে দেব না।শুক্রবারের জনাকীর্ণ সমাবেশে পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের ক্ষমতাসীণ বিজেপির কঠোর সমালোচনা করেন।

তিনি বলেন, গরু রক্ষার নামে গো-রাক্ষসের দলের তাণ্ডব চলছে। দুর্নীতি ধামাচাপা দিতে পরিকল্পনামাফিক অশান্তি পাকানো হচ্ছে। তিনি অভিযোগ করেন, পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে সব কিছু জ্বালিয়ে, পুড়িয়ে দিচ্ছে। মানুষের খাওয়া-পরাতেও বিধিনিষেধ আরোপ করছে বিজেপি সরকার। বসিরহাট-বাদুড়িয়ার দাঙ্গার প্রতি ইঙ্গিত করে বিজেপির বিরুদ্ধে মমতা বলেন, বাংলাদেশ কিংবা গুজরাটের অশান্তির ঘটনাকে পশ্চিমবঙ্গের বলে প্রচার করা হচ্ছে।

এসব অপপ্রচারের বিরুদ্ধে নিজদল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাকর্মীদের সামাজিক মাধ্যমে সরব হওয়ারও আহ্বান জানান সভানেত্রী মমতা।তিনি বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‌তৃণমূল হল প্রতিবাদের ভাষা। তাই সারদা-নারদ নিয়ে সিবিআই, ইডি, আয়কর দিয়ে ভয় দেখানো হচ্ছে। পরিকল্পনা করে নারদ কেলেঙ্কারি করা হয়েছে। আমি মনে করি না তৃণমূলের কেউ দোষী।পাঁচ বছর ধরে তদন্ত চললেও এখনও কিছুই প্রমাণিত হয়নি বলে জানান মমতা।

এসময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ২০১৯ সালে বড়দা (মোদি) বিদায় নেবেন।কেলেঙ্কারির তদন্ত করার ব্যাপারে পক্ষপাতের অভিযোগ করেন মমতা। তিনি বলেন, রাজস্থান, কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশে একের পর এক কেলেঙ্কারি রয়েছে। তখন সিবিআই, ইডি সব ঘুমিয়ে পড়ল।দুর্নীতির অর্থ বাজেয়াপ্তের নামের বড়সর দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, নোটবন্দির নামে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। তার জবাব কে দেবে? চোরের মায়ের বড় গলা।

তিনি আরও বলেন, তৃণমূলের মধ্যে যা স্বচ্ছতা আছে তা অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের নেই। আমি চ্যালেঞ্জ করছি এর শেষ দেখে ছাড়ব। যদি সঠিক পথে তদন্ত না হয় তাহলে আমরাও হাজার হাজার কোটি টাকার মানহানির মামলা করব।সমাবেশে বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে দেশব্যাপী বিরোধী জোট গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথা বলেন মমতা।

তিনি বলেন, ভারতের অখণ্ডতা রক্ষা করতে পশ্চিমবঙ্গই পথ দেখাবে। সোনিয়া গান্ধী, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, নীতীশ কুমার, লালুপ্রসাদ যাদবসহ সব বিরোধীদের পাশে আছে তৃণমূল। বিজেপির বিরুদ্ধে যারাই লড়াই করবে তাদের পাশে থাকবে তৃণমূল। বিনিময়ে আমার কিছু চাই না।বিজেপির বিরুদ্ধে বিরোধী জোট ক্রমেই ভালো করবে বলে সমাবেশে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভাল ফল হয়েছে। উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ফলাফল আরও বাড়বে। আর ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে ৩০ শতাংশও ভোট বিজেপি। তার জন্য লাগাতার রাজনৈতিক কর্মসূচি নিতে হবে।বিজেপিকে ধূলিস্যাৎ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, পঞ্চায়েত, পৌরসভা নির্বাচনে ওদের বোল্ড আউট করতে হবে। যাতে আর লড়াই করার সাহস দেখাতে না পারে।