ঢাকা ১১:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গুলশান হামলার অন্যতম দুই পরিকল্পনাকারী নিহত

অাকাশ জাতীয় ডেস্ক:

গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার অন্যতম দুই পরিকল্পনাকারী ও সন্দেহভাজন গত এপ্রিলে চাঁপাইনবাবগঞ্জে পুলিশের অভিযানে নিহত হন বলে জানিয়েছে পুলিশের একটি সূত্র। তাঁরা হলেন বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেট ও মিজানুর রহমান ওরফে ছোট মিজান।আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশ সদর দপ্তরের সভাকক্ষে বিশেষ অপরাধবিষয়ক সভায় এসব জানানো হয়। সভায় উপস্থিত একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সূত্রগুলো জানায়, সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া সোহেল মাহফুজকে জিজ্ঞাসাবাদের পর এসব তথ্য পেয়েছে পুলিশ। তবে এখনো ডিএনএ মিলিয়ে নিশ্চত হওয়া যায়নি। ৬ জুলাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে সোহেল মাহফুজকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় পুলিশ।

গত ২৬ ও ২৭ এপ্রিল শিবগঞ্জের মোবারকপুর ইউনিয়নের ত্রিমোহনী গ্রামে রফিকুল ইসলাম ওরফে আবুর বাড়িতে ‘অপারেশন ইগল হান্ট’ নামের অভিযানটি চালায় পুলিশের কাউন্টার টেররিজম। ওই অভিযানের পর জানানো হয়, রফিকুলসহ চারজন নিহত হয়েছেন। এরপর ২৯ এপ্রিল কাউন্টার টেররিজম ইউনিট জানায়, ওই অভিযানে নিহত চারজনের একজন ঝিনাইদহের আস্তানা থেকে পালিয়ে যাওয়া ‘জঙ্গি’ আবদুল্লাহ। তিনি ধর্মান্তরিত মুসলমান। ওই বক্তব্যের নয় দিনের মাথায় গত ৮ মে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট জানায়, ধর্মান্তরিত আবদুল্লাহ চাঁপাইনবাবগঞ্জে মারা যাননি, তিনি গত ৭ মে ঝিনাইদহে অপারেশন শাটল স্প্লিটে নিহত হন।এরপর আজ পুলিশের বিশেষ অপরাধবিষয়ক সভায় কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিহত অপর দুই ব্যক্তি হলেন বাশারুজ্জামান ও ছোট মিজান। বাশারুজ্জামানের আরেকটি সাংগঠনিক নাম শাহেদ, তিনি নব্য জেএমবিতে ১১ দিনের জন্য আমির ছিলেন।

গত মাসে পুলিশ জানিয়েছিল, বাশারুজ্জামান, ছোট মিজান, সোহেল মাহফুজসহ মাত্র পাঁচজনকে ধরতে পারলে হোলি আর্টিজান মামলার তদন্ত শেষ করা যাবে। এখন হোলি আর্টিজানে হামলায় যুক্ত আর মাত্র দুজনকে ধরার বাকি রয়েছে। তাঁরা হলেন হাদিসুর রহমান সাগর ও রাশেদ ওরফে র‍্যাশ।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আরেকটি সূত্র জানায়, যে সময় বাশারুজ্জামান নিহত হয়েছিলেন বলা হচ্ছে, এর অন্তত ছয় মাস আগে কোনো একটি বাহিনীর হাতে তিনি আটক হন বলে তাঁদের কাছে তথ্য রয়েছে। এমনকি গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর আজিমপুরের বাসা থেকে গ্রেপ্তারের পর নিহত জঙ্গি তানভীর কাদরির কিশোর ছেলে তাহরিম কাদরি আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতেও বাশারুজ্জামান নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে।

ওই জবানবন্দিতে তাহরিম উল্লেখ করে, তামিম চৌধুরী, বাশারুজ্জামান ও মারজান তাদের বসুন্ধরার বাসায় ব্যাগে ভরে অস্ত্র নিয়ে এসেছিল। হোলি আর্টিজানে হামলার দিনই তাঁরা বাসা বদলে পল্লবী চলে যান। এর কিছুদিন পর রাশেদ ওরফে র‍্যাশ বাসায় এসে জানান, চকলেটকে পাওয়া যাচ্ছে না। রাশেদ এ সময় আমাদের বাসা পরিবর্তন করতে বলেন। এরপর তাঁরা বাসা বদলে রূপনগর চলে যান। একই সময় আজিমপুরেও একটি বাসা ভাড়া করা হয়।পরে ১০ সেপ্টম্বর আজিমপুরের ওই আস্তানায় অভিযান চালায় পুলিশ। এতে তানভীর কাদরী নিহত হন। ওই আস্তানা থেকে শিশুসন্তানসহ বাশারের স্ত্রী শারমীন গ্রেপ্তার হন।বাশারুজ্জামান ২০০৩ সালে রাজশাহীর নিউ মডেল ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে ঢাকার ধানমন্ডির আইএসটিতে কম্পিউটার বিজ্ঞানে ভর্তি হন। তিনি বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তির প্রতিষ্ঠানে চাকরিও করেছেন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বন্যার পানি কমার সাথে সাথে জলবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে

গুলশান হামলার অন্যতম দুই পরিকল্পনাকারী নিহত

আপডেট সময় ০১:৪৩:৩৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ জুলাই ২০১৭

অাকাশ জাতীয় ডেস্ক:

গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার অন্যতম দুই পরিকল্পনাকারী ও সন্দেহভাজন গত এপ্রিলে চাঁপাইনবাবগঞ্জে পুলিশের অভিযানে নিহত হন বলে জানিয়েছে পুলিশের একটি সূত্র। তাঁরা হলেন বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেট ও মিজানুর রহমান ওরফে ছোট মিজান।আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশ সদর দপ্তরের সভাকক্ষে বিশেষ অপরাধবিষয়ক সভায় এসব জানানো হয়। সভায় উপস্থিত একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সূত্রগুলো জানায়, সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া সোহেল মাহফুজকে জিজ্ঞাসাবাদের পর এসব তথ্য পেয়েছে পুলিশ। তবে এখনো ডিএনএ মিলিয়ে নিশ্চত হওয়া যায়নি। ৬ জুলাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে সোহেল মাহফুজকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় পুলিশ।

গত ২৬ ও ২৭ এপ্রিল শিবগঞ্জের মোবারকপুর ইউনিয়নের ত্রিমোহনী গ্রামে রফিকুল ইসলাম ওরফে আবুর বাড়িতে ‘অপারেশন ইগল হান্ট’ নামের অভিযানটি চালায় পুলিশের কাউন্টার টেররিজম। ওই অভিযানের পর জানানো হয়, রফিকুলসহ চারজন নিহত হয়েছেন। এরপর ২৯ এপ্রিল কাউন্টার টেররিজম ইউনিট জানায়, ওই অভিযানে নিহত চারজনের একজন ঝিনাইদহের আস্তানা থেকে পালিয়ে যাওয়া ‘জঙ্গি’ আবদুল্লাহ। তিনি ধর্মান্তরিত মুসলমান। ওই বক্তব্যের নয় দিনের মাথায় গত ৮ মে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট জানায়, ধর্মান্তরিত আবদুল্লাহ চাঁপাইনবাবগঞ্জে মারা যাননি, তিনি গত ৭ মে ঝিনাইদহে অপারেশন শাটল স্প্লিটে নিহত হন।এরপর আজ পুলিশের বিশেষ অপরাধবিষয়ক সভায় কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিহত অপর দুই ব্যক্তি হলেন বাশারুজ্জামান ও ছোট মিজান। বাশারুজ্জামানের আরেকটি সাংগঠনিক নাম শাহেদ, তিনি নব্য জেএমবিতে ১১ দিনের জন্য আমির ছিলেন।

গত মাসে পুলিশ জানিয়েছিল, বাশারুজ্জামান, ছোট মিজান, সোহেল মাহফুজসহ মাত্র পাঁচজনকে ধরতে পারলে হোলি আর্টিজান মামলার তদন্ত শেষ করা যাবে। এখন হোলি আর্টিজানে হামলায় যুক্ত আর মাত্র দুজনকে ধরার বাকি রয়েছে। তাঁরা হলেন হাদিসুর রহমান সাগর ও রাশেদ ওরফে র‍্যাশ।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আরেকটি সূত্র জানায়, যে সময় বাশারুজ্জামান নিহত হয়েছিলেন বলা হচ্ছে, এর অন্তত ছয় মাস আগে কোনো একটি বাহিনীর হাতে তিনি আটক হন বলে তাঁদের কাছে তথ্য রয়েছে। এমনকি গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর আজিমপুরের বাসা থেকে গ্রেপ্তারের পর নিহত জঙ্গি তানভীর কাদরির কিশোর ছেলে তাহরিম কাদরি আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতেও বাশারুজ্জামান নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে।

ওই জবানবন্দিতে তাহরিম উল্লেখ করে, তামিম চৌধুরী, বাশারুজ্জামান ও মারজান তাদের বসুন্ধরার বাসায় ব্যাগে ভরে অস্ত্র নিয়ে এসেছিল। হোলি আর্টিজানে হামলার দিনই তাঁরা বাসা বদলে পল্লবী চলে যান। এর কিছুদিন পর রাশেদ ওরফে র‍্যাশ বাসায় এসে জানান, চকলেটকে পাওয়া যাচ্ছে না। রাশেদ এ সময় আমাদের বাসা পরিবর্তন করতে বলেন। এরপর তাঁরা বাসা বদলে রূপনগর চলে যান। একই সময় আজিমপুরেও একটি বাসা ভাড়া করা হয়।পরে ১০ সেপ্টম্বর আজিমপুরের ওই আস্তানায় অভিযান চালায় পুলিশ। এতে তানভীর কাদরী নিহত হন। ওই আস্তানা থেকে শিশুসন্তানসহ বাশারের স্ত্রী শারমীন গ্রেপ্তার হন।বাশারুজ্জামান ২০০৩ সালে রাজশাহীর নিউ মডেল ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে ঢাকার ধানমন্ডির আইএসটিতে কম্পিউটার বিজ্ঞানে ভর্তি হন। তিনি বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তির প্রতিষ্ঠানে চাকরিও করেছেন।