অাকাশ নিউজ ডেস্ক:
কাপুরুষ দিয়ে দেশের রাজনীতি নির্ধারিত হবে নাআওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, যারা ধমক খেয়ে মাঠ ছেড়ে দেয়, সেই কাপুরুষ দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতি নির্ধারিত হবে না।আজ রোববার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার কারাবরণ দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি মতিয়া চৌধুরী এসব কথা বলেন।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘আজকে লম্বা কথা বলেন, কী করছিলেন ড. কামাল হোসেন আপনি? আগের দিন এক ধমক খাইয়া রাতের বেলা প্লেনের টিকিট কাইটা চলে গেলেন বিদেশে…। কর্মিসভায় নাম লেখা হচ্ছে, মান্নান ভাই আমার পাশ থাইকা বলল, চৌধুরী, লোক তো উইড়া গেছে। অর্থাৎ তিনি তাঁর আগে রাত্রি বেলায় ধমক খাইয়া প্লেনের টিকিট নিয়া বিদেশে চলে গেছেন। যারা নাকি সেই হাসনাতের ধমক খাইয়া মাঠ ছেড়ে দেয়, সেই কাপুরুষ দিয়া বাংলাদেশের রাজনীতি নির্ধারিত হবে না। লম্বা কথা বলেন। বৈরী পরিবেশ দেখলে, কাছিমের মতো গলা গুটায় নেন।’
কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘একদল লোক আছে, বলে হ্যাঁ, পার্লামেন্টে এমন সব কথা বলা হয়—এমন সব ভাষা বলা হয়! কী ভাষায় বলব? কাপুরুষকে কাপুরুষ বলব, না মহাপুরুষ বলব—কোনটা বলব। কাপুরুষ কাপুরুষই।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করতে হবে। যত রকমের ভেদাভেদ আছে সব ভুলে গিয়ে সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিতে হবে। সব ধরনের মনোমালিন্য ভুলে আওয়ামী লীগের সব নেতা-কর্মীকে কাজ করতে হবে। আওয়ামী লীগ যখন পিছিয়ে যায়, কর্মীরা বাঁচিয়ে রাখেন আওয়ামী লীগকে।
বিশেষ অতিথি খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, ‘ষড়যন্ত্র থেমে নেই। ২০০১ সালে যেমন ষড়যন্ত্র হয়েছে এবং ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত যে নির্যাতন হয়েছে, তা সহ্য করেছি। এখনো ষড়যন্ত্র চলছে। নির্বাচন সামনে, ষড়যন্ত্র কিন্তু থেমে নেই। এক-এগারোর কুশীলবেরা এখনো সক্রিয়। এখনো মান্না দেখেন, “বেকুব” মান্না। নিজেকে বেকুব হিসেবে বলে। আজকের পত্রিকায় দেখেছি মান্নার বক্তব্য। বেকুব মান্নারা এবং এক-এগারোর কুশীলবেরা এখনো সক্রিয়।’
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য গতকাল শনিবার লন্ডন গেছেন। খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া বিদেশে গেছেন। লন্ডন গেছেন চিকিৎসার জন্য। আজকের পত্রিকায় দেখলাম দুই মাস তাঁর চিকিৎসার জন্য লাগবে। দুই মাস। অর্থাৎ এই দুই মাস এক্সটেনশনও (বাড়তে) হতে পারে। এর কারণটা কী? এর কারণ একটা। অনেকে বলছেন বেগম খালেদা জিয়া তাঁর ছেলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ষড়যন্ত্রের জন্য গেছেন। আমি বলি তা নয়, আসলে লক্ষ রাখেন। খালেদা জিয়ার দুর্নীতির মামলা, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের মামলা শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। নিষ্পত্তির একেবারে চূড়ান্ত পর্যায়ে। বারবার এই ছুতো দিয়ে, সেই ছুতো দিয়ে অ্যাপিলেট ডিভিশনে দেরি করছেন। কিন্তু কোনোখানে কোনো কাজ হচ্ছে না। এসব ঠুনকো অজুহাত দিয়ে হাইকোর্টে যাচ্ছেন, অ্যাপিলেট ডিভিশনে যাচ্ছেন, কোনো কাজই হচ্ছে না। আজকে সর্বশেষ এই কৌশল নিয়েছেন, বিদেশে গিয়েছেন এবং মামলাটা যাতে তাঁর অনুপস্থিতিতে না এগোয়। সেই কৌশল তিনি গ্রহণ করেছেন।’
প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব মো. সাইফুজ্জামান শিখর বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ত্যাগের রাজনীতি করেন। সামনে নির্বাচন আসছে। সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করুন। নিজেদের ভেতরের সমস্যা মিটিয়ে ফেলুন। সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকুন। নির্বাচনে যেভাবেই হোক আওয়ামী লীগকে জেতাতে হবে। কিন্তু যদি পরাজিত হয়, ২০০১-এর চেয়েও হাজার গুণ বেশি বিপদের সম্মুখীন হতে হবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ এবং মহানগর দক্ষিণের অন্যান্য নেতা।