ঢাকা ১১:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্বের সেরা মশার নগরী সিটি অফ মসকুইটো

অাকাশ আর্ন্তজাতিক ডেস্ক:

আফ্রিকায় প্রতি মিনিটে ম্যালেরিয়ায় ভুগেই মারা যায় অন্তত দু’জন শিশু। তাই মশার কামড় থেকে মানুষকে বাঁচাতে সারাদিন কাজ করছে তানজানিয়ার ছোট্ট শহর ‘সিটি অফ মসকুইটো’ অর্থাৎ ‘মশার নগর’। তানজানিয়ার প্রত্যন্ত এক শহর ইফাকারা। ইফাকার শব্দের অর্থ ‘যেখানে আমি মৃত্যুবরণ করি’। নামেই বোঝা যায় বসবাসের জন্য শহরটি আসলে কেমন। মানুষ যেন সেখানে জীবন উপভোগের কথা, সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে কিছুদিন বাঁচার কথা ভাবতেই পারে না, জন্মের পর থেকে আসল কাজই যেন মশার কামড়ে রোগাক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর অপেক্ষা করা।

তাদের অধিকাংশ মানুষই খুব গরিব। ঘরগুলোও খুব ছোট ছোট। বেশিরভাগ মানুষই বাস করেন এমন ঘরে যেখানে একটি বা দুটি বিছানা পাতার পর আর জায়গা থাকে না। ফলে ঘুমানো ছাড়া বাকি সব কাজই করতে হয় ঘরের বাইরে। আইএইচআই তাই মশা ধরতেও মানুষকে কাজে লাগায়। অল্প পারিশ্রমিকে অনেকেই ঘরের বাইরে বিশেষ ধরনের মশারির নিচে বসে থাকেন। মশারির সঙ্গে এক ধরনের মশা ধরার ফাঁদের সংযোগ থাকে। ফলে মানুষের রক্তের লোভে মশারিতে বসতে গিয়ে ধরা পড়ে ঝাঁকে ঝাঁকে মশা।

টাকার বিনিময়ে মানুষকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘরের বাইরে মশারির নিচে বসিয়ে রেখেও আশানুরূপ ফল পাওয়া যাচ্ছিল না। তাই ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া হয় বিষ মাখানো মশারি। এক সময় মশারি যে মরণ ফাঁদ তা-ও টের পেয়ে গেল মশা। তাই মানুষ যখন ঘুমাতে যায় তার ঠিক আগে এবং ভোরে যখন ঘুম থেকে ওঠে তখন রক্ত-ক্ষুধা মেটানোয় ব্যস্ত হয়ে পড়ল তারা। অবস্থা সামাল দিতে তাই এবার এসেছে ‘মসকুইটো ল্যান্ডিং বক্স’ (এমএলবি)।

কাঠের তৈরি কালো রঙয়ের এটি এক বাক্স, যা আসলে মশা মারার নতুন ধরনের ফাঁদ। বাক্সে যাতে ঝাঁকে ঝাঁকে মশা এসে বসে, সেই ব্যবস্থা করতে অভিনব উপায়ে বাতাসে ছড়ানো হয় মানুষে ঘামের গন্ধ। সেই গন্ধ পেলেই মশারা ভাবে যন্ত্রটির ভেতরেই রয়েছে তাদের ‘সুস্বাদু’ খাবার। খাবারের লোভে উড়ে এসে বসলেই তাদের জীবনাবসান!

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বন্যার পানি কমার সাথে সাথে জলবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে

বিশ্বের সেরা মশার নগরী সিটি অফ মসকুইটো

আপডেট সময় ০২:৩২:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুলাই ২০১৭

অাকাশ আর্ন্তজাতিক ডেস্ক:

আফ্রিকায় প্রতি মিনিটে ম্যালেরিয়ায় ভুগেই মারা যায় অন্তত দু’জন শিশু। তাই মশার কামড় থেকে মানুষকে বাঁচাতে সারাদিন কাজ করছে তানজানিয়ার ছোট্ট শহর ‘সিটি অফ মসকুইটো’ অর্থাৎ ‘মশার নগর’। তানজানিয়ার প্রত্যন্ত এক শহর ইফাকারা। ইফাকার শব্দের অর্থ ‘যেখানে আমি মৃত্যুবরণ করি’। নামেই বোঝা যায় বসবাসের জন্য শহরটি আসলে কেমন। মানুষ যেন সেখানে জীবন উপভোগের কথা, সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে কিছুদিন বাঁচার কথা ভাবতেই পারে না, জন্মের পর থেকে আসল কাজই যেন মশার কামড়ে রোগাক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর অপেক্ষা করা।

তাদের অধিকাংশ মানুষই খুব গরিব। ঘরগুলোও খুব ছোট ছোট। বেশিরভাগ মানুষই বাস করেন এমন ঘরে যেখানে একটি বা দুটি বিছানা পাতার পর আর জায়গা থাকে না। ফলে ঘুমানো ছাড়া বাকি সব কাজই করতে হয় ঘরের বাইরে। আইএইচআই তাই মশা ধরতেও মানুষকে কাজে লাগায়। অল্প পারিশ্রমিকে অনেকেই ঘরের বাইরে বিশেষ ধরনের মশারির নিচে বসে থাকেন। মশারির সঙ্গে এক ধরনের মশা ধরার ফাঁদের সংযোগ থাকে। ফলে মানুষের রক্তের লোভে মশারিতে বসতে গিয়ে ধরা পড়ে ঝাঁকে ঝাঁকে মশা।

টাকার বিনিময়ে মানুষকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘরের বাইরে মশারির নিচে বসিয়ে রেখেও আশানুরূপ ফল পাওয়া যাচ্ছিল না। তাই ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া হয় বিষ মাখানো মশারি। এক সময় মশারি যে মরণ ফাঁদ তা-ও টের পেয়ে গেল মশা। তাই মানুষ যখন ঘুমাতে যায় তার ঠিক আগে এবং ভোরে যখন ঘুম থেকে ওঠে তখন রক্ত-ক্ষুধা মেটানোয় ব্যস্ত হয়ে পড়ল তারা। অবস্থা সামাল দিতে তাই এবার এসেছে ‘মসকুইটো ল্যান্ডিং বক্স’ (এমএলবি)।

কাঠের তৈরি কালো রঙয়ের এটি এক বাক্স, যা আসলে মশা মারার নতুন ধরনের ফাঁদ। বাক্সে যাতে ঝাঁকে ঝাঁকে মশা এসে বসে, সেই ব্যবস্থা করতে অভিনব উপায়ে বাতাসে ছড়ানো হয় মানুষে ঘামের গন্ধ। সেই গন্ধ পেলেই মশারা ভাবে যন্ত্রটির ভেতরেই রয়েছে তাদের ‘সুস্বাদু’ খাবার। খাবারের লোভে উড়ে এসে বসলেই তাদের জীবনাবসান!