অাকাশ জাতীয় ডেস্ক:
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন লাইব্রেরির দোতলার একটি কক্ষে দুই শিক্ষার্থী প্রেমিক যুগলের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এখন ভাইরাল।ইতোমধ্যে ওই ভিডিও নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়সহ নগরীতে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী তাদের ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ভিডিওতে দেখা ওই দুই শিক্ষার্থীকে তিরস্কার করেছেন। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি ছাড়িয়ে ভিডিওটি বরিশালের প্রায় সব স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মুঠোফোনে ছড়িয়ে পড়েছে।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন লাইব্রেরি কক্ষে বসে শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হয় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং অনুষদের এক ছাত্র ও আইন বিভাগের এক ছাত্রী।স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই প্রেমিক যুগলের আপত্তিকর ভিডিও বেশ কয়েকদিন আগে ফাঁস হয়ে যায়। ওই ভিডিও’র ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, ‘বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর আপত্তিকর ভিডিও’।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, ওই দুই শিক্ষার্থী বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। ৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটিতে দেখা যায়, তারা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন লাইব্রেরি ভবনের দোতলার একটি কক্ষে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছেন।
এ সময় তারা এতটাই অন্তরঙ্গ ছিলেন যে, ওই রুমের পাশ দিয়ে অন্য শিক্ষার্থীদের কথাবার্তা ও লাইব্রেরি ভবনের ইমারত শ্রমিকদের হাতুড়িপেটার শব্দ শোনা গেলেও তারা দুজন অনৈতিক কাজে মগ্ন ছিলেন। এ সময় কক্ষের একটি ছিদ্র দিয়ে এক শিক্ষার্থী ওই ভিডিও ধারণ করেন।
ক্যাম্পাস সূত্র জানায়, প্রেমিক যুগলের আপত্তিকর ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে ওই প্রেমিকের মোবাইলে পাঠিয়ে দিয়ে তার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। কিন্তু প্রেমিক এতে রাজি না হওয়ায় ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি ছড়িয়ে দেয়া হয়।
এদিকে ভিডিও ফাঁস হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন ওই প্রেমিক যুগল। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গাঢাকা দিয়েছেন তারা। তাদের বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেও তাদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সেই সঙ্গে তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
ববির ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং অনুষদের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, ওদের দুজনের ভিডিও ফাঁস হওয়ায় আমরা বিব্রতকর অবস্থার আছি। ওদের কারণে সবাই আমাদের কটূ কথা বলে। অন্য চোখে দেখে। অনেকে সেই ভিডিও সরাসরি আমাদের কাছে চেয়ে বসে।এ ঘটনায় ববির ছাত্রলীগ নেতা সিফাত, নাঈম, আরিফ জুবায়েদ, শারমিন, লাবুনি, লিমা, খুশি, রাহাত, লিমন, তৌসিফ, আতিক, কৌশিকসহ অনেকই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
তারা বলেন, ওদের দুজনের কারণে আমরা এখন লজ্জায় মুখ লুকিয়ে রাখি। বিষয়টি নিয়ে আমরা এতটাই অসুবিধার মধ্যে আছি যা কাউকে বলে বোঝাতে পারব না। ওদের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। আমরাও সমালোচনার মধ্যে পড়ছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জেনেও ওদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের খাবার হোটেলের কর্মচারী জসিম জানান, ভিডিও ফাঁস হওয়ার পর দোকানে আসা কাস্টমাররা ওদের বিষয় নিয়েই বেশিরভাগ সমালোচনা করছে। কেউ কেউ আমাদের কাছে সেই ভিডিও আছে কিনা জানতে চাইছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর সরদার কায়সার আহমেদ বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ওই দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলেও শুনেছি। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে আমি অসুস্থ থাকায় ক্যাম্পাসে যেতে পারিনি। তাই পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা আমার জানা নেই।
বিষয়টি জানার জন্য বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস.এম ইমামুল হকের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।