আকাশ আর্ন্তজাতিক ডেস্ক:
‘‘রাজ্যের সর্বনাশ হয়ে গেল’’, দুই ২৪ পরগনায় আমপানের তাণ্ডবলীলা নিয়ে বলতে বসে বার বার এই কথাটাই বেরিয়ে আসছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ থেকে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ সুন্দরবনে আছড়ে পড়ার পর দক্ষিণে তাণ্ডব চালিয়ে যখন উত্তর ২৪ পরগনায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড়, সেইসময় রাত ৯টা নাগাদ নবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। শুরুতেই বলেন, ‘‘দুই ২৪ পরগনা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে…বাড়িঘর, নদী বাঁধ ভেঙে গিয়েছে, ক্ষেত ভেসে গিয়েছে।’’ তখনও পর্য়ন্ত ১০ থেকে ১২ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে নবান্নে, জানান মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলন শেষ করার পর আরও কয়েক জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে বিভিন্ন জেলা থেকে।
সারাদিনই নবান্নের কন্ট্রোল রুম থেকে ঝড়ের গতিপ্রকৃতিক খোঁজখবর রাখছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী জানান, পাথরপ্রতিমা, নামখানা, বাসন্তী, কুলতলি, বারুইপুর, সোনারপুর, ভাঙড় থেকে যা খবর এসেছে তা ভয়াবহ। খারাপ খবর উত্তর ২৪ পরগনা থেকেও। তবে ক্ষয়ক্ষতি কতটা হয়েছে, সেই সংক্রান্ত সবিস্তার তথ্য পেতে ৩-৪ দিন লেগে যাবে বলে জানান তিনি।
একদিনের মধ্যেও ৫ লক্ষ মানুষকে সরাতে পেরেছিলেন, তই ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা ঠেকানো গিয়েছিল বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘এলাকার পর এলাকা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের সাহায্যে ৫ লক্ষ মানুষকে সরাতে পেরেছি। ১৭৩৭ এ এমন ভয়ঙ্কর ঝড় হয়েছিল। ওয়ার রুমে বসে আছি আমি। নবান্নে আমার অফিস কাঁপছে। একটা কঠিন পরিস্থিতির যুদ্ধকালীন মোকাবিলা করলাম। মাঝরাত অবধি হয়ত ঝঞ্ঝা চলবে।’’
নন্দীগ্রাম ও রামনগর-সহ একাধিক এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘নন্দীগ্রাম, রামনগর প্রভৃতি এলাকায় বড় ক্ষতি। দঃ ও উত্তর ২৪ পরগণা প্রায় ধ্বংস ঝড়ের দাপটে। গাছ পড়ে মানুষ মারা গেছেন। মোট ক্ষতি এখনও গণনা করা যায়নি। অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ নেই, জল নেই। পাথরপ্রতিমা, নামখানা, কাকদ্বীপ, কুলতলি, বারুইপুর, সোনারপুর সব জায়গায় ধ্বংসের ছবি। রাজারহাট, হাসনাবাদ, সন্দেশখালি, গোসাবা, হাবড়া সব জায়গাই বিপর্যস্ত।’’
সারাদিনই নবান্নের কন্ট্রোল রুম থেকে ঝড়ের গতিপ্রকৃতির খোঁজখবর রাখছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী জানান, পাথরপ্রতিমা, নামখানা, বাসন্তী, কুলতলি, বারুইপুর, সোনারপুর, ভাঙড় থেকে যা খবর এসেছে তা ভয়াবহ। খারাপ খবর উত্তর ২৪ পরগনা থেকেও। তবে ক্ষয়ক্ষতি কতটা হয়েছে, সেই সংক্রান্ত সবিস্তার তথ্য পেতে ৩-৪ দিন লেগে যাবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, দক্ষিণবঙ্গ প্রায় ৯৯ শতাংশ শেষ হয়ে গেছে। একটা ডিজাস্টার হয়েছে, আমরা শকড। আমরা খুবই স্তম্ভিত, খুব খারাপ লাগছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে মমতা বলেন, কেন্দ্রের কাছে আবেদন থাকবে, পলিটিক্যালি দেখবেন না, মানবিক ভাবে দেখুন।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ নেই, জল নেই, পুকুর, চাষের জমি সব শেষ। ধ্বংসের হাত থেকে উন্নয়নের পথে আবার সবাইকে শামিল করে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেন মমতা।
তিনি বলেন, কত যে বাড়ি, নদী বাঁধ ভেঙে গিয়েছে, খেত থেকে সব সর্বনাশ হয়ে গেছে। সংখ্যাটা এখুনি বলা যাবে না, ১০-১২ জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। গোটা ধ্বংসের চিত্র বুঝতে ১০-১২ দিন লেগে যাবে, এক দিনে কিচ্ছু হবে না।