আর একজন রোহিঙ্গাকেও আশ্রয় দিতে পারবো না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

0
2419

আকাশ জাতীয় ডেস্ক: 

মালয়েশিয়ার উদ্দেশে রওনা হওয়া শ’পাঁচেক রোহিঙ্গা আন্দামান ও বঙ্গোপসাগরে ভাসমান অবস্থায় রয়েছে। এসব ভাসমান রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দিতে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া ও কমনওয়েলথ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী লর্ড আহমেদ প্রস্তাব দিয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশ আর একজন রোহিঙ্গাকেও আশ্রয় দিতে পারবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে।

মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রী লর্ড আহমেদ টেলিফোনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনকে এমন প্রস্তাব দেন। জবাবে প্রত্যাখ্যানের পাশাপাশি মন্ত্রী সাগরে ভাসা রোহিঙ্গাদের উদ্ধার করে যুক্তরাজ্যে আশ্রয় দিতে দেশটির রাজকীয় নৌবাহিনীর জাহাজ পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছেন বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বার্তায় জানানো হয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ এবং সীমিত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও মানবিকতার পরিচয় দিয়ে ইতিমধ্যে ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। ৫০০ রোহিঙ্গা সে তুলনায় অতি সামান্য। তারা এখন বাংলাদেশ সীমানায় নেই। মানবিক কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে অনুরোধ করা হলেও এ এলাকার অন্যান্য দেশকে আশ্রয় দিতে বলা হয়নি।’

যুক্তরাজ্যের রয়েল জাহাজ এসেও তাদের উদ্ধার করে আশ্রয় দিতে পারে বলে যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রীকে মোমেন বলেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য দেশের উচিত বাংলাদেশে অবস্থানরত ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে তাদের দেশে নিয়ে গিয়ে আশ্রয় দেয়া।’

এ সময় রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সব দেশের দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

বর্তমানে বিশ্বের অন্যান্য দেশের বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোর উচিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানে এগিয়ে আসার এমন আহ্বান জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশের ওপরও রোহিঙ্গাদের আশ্রয় প্রদানের দায়িত্ব বর্তায়। মিয়ানমারে এখনো মিলিটারি অপারেশন চলছে এবং রোহিঙ্গারা মারা যাচ্ছে। কিছুদিন আগেও তারা বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করেছে। অবশিষ্ট রোহিঙ্গারা আবারও বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করতে পারে।’

এ সময় মোমেন ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ যারা মিয়ানমারে বিনিয়োগ করছেন সেসব দেশের সমালোচনা করেন। মানবাধিকার সংগঠনগুলোও এ বিষয়ে সোচ্চার নয় বলে দাবি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর।

করোনা ইস্যুতে বাংলাদেশের বহুলোক মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে চাকরি হারিয়ে খাবারের অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার জন্য যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রীকে আহ্বান জানান মোমেন। বলেন, ‘যুক্তরাজ্যসহ উন্নত বিশ্বের উচিত মানবিক কারণে তাদের চাকরিতে বহাল রাখার বিষয়ে সোচ্চার হওয়া।’

যুক্তরাজ্যের ক্রেতারা যাতে গার্মেন্টস খাতে বাংলাদেশে ক্রয়াদেশ বাতিল না করেন সে বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা কামনা করেন। মোমেন বলেন, ‘ক্রয়াদেশ বাতিল হওয়ায় বাংলাদেশের গার্মেন্টসখাত সমস্যাসংকুল।’ এ বিষয়ে ড. মোমেন বাংলাদেশের গার্মেন্টস খাতে ক্রয়াদেশ বজায় রাখার জন্য যুক্তরাজ্যকে বিশেষ ফান্ড গঠনের অনুরোধ করেন।

বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যকে করোনা প্রতিরোধে উপহার হিসেবে চিকিৎসা সামগ্রী পাঠাবে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী লর্ড আহমেদকে অবহিত করেন। এর জবাবে যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রী মোমেনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।