অাকাশ জাতীয় ডেস্ক:
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাত বছরের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। মঙ্গলবার কর অঞ্চল ৮ থেকে এসংক্রান্ত চিঠি তফসিলি ব্যাংকগুলোয় পাঠানো হয়েছে।
চিঠি পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে লেনদেনের তথ্য এনবিআরে পাঠাতে বলা হয়েছে। কর অঞ্চল ৮’র উপকর কমিশনার মো. সফিউল আজম স্বাক্ষরিত চিঠি বৃহস্পতিবার ব্যাংকগুলোয় পৌঁছেছে। ১৭ আগস্টের মধ্যে ব্যাংকগুলো থেকে হিসাবের তথ্য পাঠাতে হবে।
বিভিন্ন ব্যাংক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এ প্রসঙ্গে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার আয়কর আইনজীবী আহমেদ আজম খান বলেছেন, এ ধরনের কার্যক্রম রাজনৈতিক হয়রানি। কারণ বর্তমানে খালেদা জিয়ার হিসাব জব্দ। এসব অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতি মাসে মাত্র ৫০ হাজার টাকা তোলার অনুমতি রয়েছে।
এনবিআরের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘বেগম খালেদা, পিতা : মরহুম ইস্কান্দার মজুমদার, স্বামী শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, টিআইএন নম্বর ১৭৩৯৩৯৫৬৭২৯৭/সার্কেল ১৬৩।
বাড়ি নং এনইডি-১, রোড নং ৭৯, গুলশান-২ ঢাকা। ২০১০ সালের ১ জুলাই থেকে এই চিঠি পাওয়া পর্যন্ত সমস্ত হিসাব, লেনদেনের তথ্য সাত দিনের মধ্যে জানাতে হবে।’ আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর ১১৩ (এফ) অনুসারে এ হিসাব তলব করা হয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। জানতে চাইলে এনবিআরের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে কেউ কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কর অঞ্চল ৮-এর এক শীর্ষ কর্মকর্তা দৈনিক আকাশকে বলেন, নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই একজন করদাতার আয়করের তথ্য তলব করা হয়। খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রেও সেটি করা হয়েছে।
জানতে চাইলে খালেদা জিয়ার আইনজীবী আহমেদ আজম খান বলেন, কোন উদ্দেশ্যে ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে, তা এখন পর্যন্ত আমরা জানি না। তবে মনে হচ্ছে, এটা রাজনৈতিক হয়রানি।
তিনি বলেন, হিসাব তলব করলে কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু কথা হল খালেদা জিয়ার ব্যাংক হিসাব তলব করতে হবে কেন। হিসাবের সব তথ্য আয়কর নথিতে উল্লেখ আছে। প্রতিবছরই আয়করের সঙ্গে হিসাব জমা দেয়া হয়। এবারও হিসাব জমা দেয়া হবে। ফলে হিসাব তলবের জন্য আলাদা কোনো প্রক্রিয়ার দরকার নেই।
জানা গেছে, ওয়ান ইলেভেনের সময় খালেদা জিয়ার ব্যাংক হিসাব জব্দ করে এনবিআর। ওই সময়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নিজ নামে বিভিন্ন ব্যাংকের ৮টি হিসাব জব্দ করা হয়।
এর মধ্যে তিনটি হিসাব থেকে বেশি লেনদেন করা হতো। বাকি ৫টি হিসাবে একটু কম লেনদেন হতো। কিন্তু ওই সময়ে হিসাব জব্দ করা হলেও প্রতিমাসে খরচের জন্য সব হিসাব মিলে ৫০ হাজার টাকা তোলার অনুমোদন দেয়া হয়। বর্তমানে ওই সীমা বহাল রয়েছে।
এ ব্যাপারে আহমেদ আজম খান বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে, ওনার (খালেদা জিয়া) বিরুদ্ধে যেহেতু এনবিআরের মামলা নেই, তাই হিসাব খুলে দেয়া হোক।
এতে সরকার রাজি না হওয়ায় বাসা ভাড়া ও অন্যান্য খরচ বাবদ ৫০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ টাকা তুলতে দেয়ার অনুমতি চেয়েছিলাম, তা-ও আমলে নেয়া হয়নি।
তিনি বলেন, মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দীনের আমলে দুই নেত্রীর হিসাব জব্দ করা হয়েছিল। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগেই বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর হিসাব খুলে দেয়া হয়।
কিন্তু বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হিসাব খুলে দেয়া হয়নি। অর্থাৎ ওই সময় থেকেই ম্যাডামের (খালেদা জিয়ার) ওপর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড একপেশে নীতি গ্রহণ করে আসছে। এটা অত্যন্ত নিন্দনীয়।