অাকাশ জাতীয় ডেস্ক:
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন অভিযোগ করেছেন, অপরিকল্পিত ড্রেনেজ সিস্টেমের (পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা) কারণে ঢাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। আর এর দায়-দায়িত্ব ওয়াসাকেই নিতে হবে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান।গতকাল বুধবার ছয় ঘণ্টায় ৫৬ থেকে ৮০ মিলিমিটার বৃষ্টিতে রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে মাঠে নেমেছিলেন মেয়র সাঈদ খোকন। সেই সময় হাঁটু পানিতে দাঁড়িয়ে মেয়র বলেন, মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া ড্রেনেজ সিস্টেম গড়ে তোলার কারণে চলমান জলাবদ্ধতার দায়দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসাকেই নিতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ওয়াসা ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ নাকচ করে দেন ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি বলেন, ‘আমি উইথ ডিউ রেসপেক্ট টু দ্য মেয়র, আমি উনার কথার সঙ্গে তো একমত না। উনি বলেছেন সম্পূর্ণ দায়িত্ব ওয়াসার। আমরা সবসময় বলে আসছি সাত হাতে। এটা এককথার একটা ফ্ল্যাট আনসার। ম্যান্ডেটই যদি ঢাকা ওয়াসার হয় একমাত্র। তাহলে আপনি কী করে ৫০০ কোটি টাকার ড্রেনেজের কাজ করলেন? কোন ম্যান্ডেটের বলে করলেন? তাহলে তো আপনার বক্তব্যই স্ববিরোধী হয়ে গেল না?’
দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার ড্রেনেজ সিস্টেম নিয়ে কাজ করার কারণে ওয়াসার ব্যাপারে বিরূপ ধারণা জন্মেছে জলাবদ্ধতার শিকার ভুক্তভোগী নাগরিকদের মধ্যে। তবে ওয়াসার নিজেদের সম্পর্কে রয়েছে বেশ উচ্চ ধারণা। তাকসিম এ খান আরো বলেন, ‘ঢাকা ওয়াসা ইজ ওয়ান অব দ্য ভেরি সাকসেসফুল ওয়াটার ইউটিলিটি নট অনলি ইন বাংলাদেশ, বাংলাদেশে তো আর তুলনা করার কিছু নাই।আমরা নিজেরাই আমাদের নিজেদের তুলনা (করতে পারি না), ইন সাউথ এশিয়া (দক্ষিণ এশিয়ায়) তাদের প্রত্যেকের তুলনায় বেঞ্চ মার্কিংয়ে, সূচকে আমরা ওয়েল এহিড (ভালোভাবে এগিয়ে)।’
এ প্রসঙ্গে নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ঢাকার জলাবদ্ধতার সমাধান ততক্ষণ পর্যন্ত এ রকম অসম্ভব মনে হবে যতক্ষণ সুশাসন প্রতিষ্ঠা না হবে।দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘দিল্লিতে হতে পারলে, ব্যাংককে হতে পারলে, সিঙ্গাপুরের কথা বাদই দিলাম। সেখানে তো ব্যত্যয় কোনো অবস্থায় হবে না। তো আমাদের এখানে হতে পারছে না কেন? তার মানে আমাদের শাসন ব্যবস্থা সেইরকম সুদৃঢ় নয়। হুকুম মানানো যাচ্ছে না।’
এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন আবারও জানালেন, আগামী বছর থেকে ঢাকার জলাবদ্ধতার সমস্যা এতটা প্রকট থাকবে না। আজ সচিবালয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘অনেকে এটাকে অন্যরকম কিছু চিন্তা করতেছেন যে আমার পলিটিক্যাল স্টেটমেন্ট। আমি পলিটিকস করি এটা সত্যি কথা। তা আমি তো কথাটা না বুঝে বলি নাই। এইটারে অন্যভাবে দেখার কোনো সুযোগ নাই। কারণ আমাদের প্রস্তুতি আছে বলেই আমি বলতে পারছি যে সামনের বছর এই ধরনের সমস্যা থাকবে না।’