ঢাকা ১২:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কলেজের দেয়ালে রডের পরিবর্তে বাঁশ

অাকাশ জাতীয় ডেস্ক:

বান্দরবান সরকারি মহিলা কলেজের দেয়ালে রডের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহার করা হচ্ছে। বুধবার (১৯ জুলাই) বিকালে বান্দরবান সরকারি কলেজের নির্মাণাধীন চারতলা ভবনের বারান্দায় ড্রপ ওয়ালে রডের ফাঁকে ফাঁকে এ বাঁশ ব্যবহার করতে দেখা যায়।পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ৮১ লাখ টাকার এ কাজটি করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইউএন এন্টারপ্রাইজের পক্ষে আওয়ামী লীগ নেতা ঠিকাদার উজ্জল বাবু।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, সরকারি মহিলা কলেজের ৪তলা ভবনের ড্রপ ওয়ালের নির্মাণ কাজে রডের পাশাপাশি চিকন করে কাটা বাঁশ ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রতিটি ধাপে একটি রড, একটি বাঁশ ধাপে ধাপে দেওয়া হচ্ছে। এভাবে প্রায় ২০০শ ফুটেরও বেশি এলাকা জুড়ে এ বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে।কলেজের শিক্ষার্থীরা জানায়, কয়েকদিন ধরে আমাদের কলেজের চারতলায় ভবনের কাজ চলছে। আজ সকাল থেকেই লেবাররা বড় বড় বাঁশ কেটে চিকন করছিল। বিকালে দেখি রডের ফাঁকে ফাঁকে ওই বাঁশগুলো রডের পরিবর্তে ব্যবহার করছে। তাদের দাবি, যদি ভবনটি একই ঠিকাদার করে থাকে তাহলে আরও একাধিক বাঁশ এ ভবনের ভেতরে থাকতে পারে।এ বিষয়ে নির্মাণ শ্রমিক আলী হোসেন বলেন, ‘রডের ভেতরে বাঁশ দিলে কাজটি অনেক শক্ত ও টেকসই হয়। তাই আমি বাঁশ ব্যবহার করছি। বিষয়টি ঠিকাদারও জানেন।’

তবে ঠিকাদার উজ্জল বাবু বলেন, ‘সিমেন্ট ভাল করে দেয়ালে লাগার জন্য আমার নির্মাণ শ্রমিক বাঁশ ব্যবহার করছিল। তবে এ বিষয়গুলো আমি জানতাম না। জানার পরপরই আমি আমার শ্রমিককে বাঁশ খুলে ফেলতে বলেছি। তবে যতটুকু রড ব্যবহার করার কথা ছিল তার থেকে কম রড ব্যবহার করা হয়নি।’ এ ব্যাপারে বান্দরবান সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রদীপ বড়ুয়া বলেন, ‘আমি কলেজে নাই। তবে আমি রডের পরিবর্তে বাঁশ দেবার কথা শুনে তাৎক্ষণিক ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে কথা বলেছি। ঠিকাদার যে কাজটি করেছে তা বড়ই অন্যায়। আমি কলেজে এসে অবশ্যই ব্যবস্থা নিব।’

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নুর হোসেন বলেন, ‘আমি চট্টগ্রাম এসেছি চিকিৎসার জন্য। তবে দীর্ঘদিন কলেজের ড্রপ ওয়ালের কাজ বন্ধ ছিল। কিন্তু কাজ শুরু করে বাঁশ কেন দিচ্ছে তা আমি জানি না। আমি আগামীকাল বান্দরবানে এসে খবর নিয়ে ব্যবস্থা নিব।’ কাজটি কে করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইউ এন এন্টারপ্রাইজের নামে কাজটি করছে আওয়ামী লীগ নেতা উজ্জল বাবু ও তাপস।

এ বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুল আজিজ উদ্দিন ভূইয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘উজ্জল বাবু সব কাজেই বেশি বাড়াবাড়ি শুরু করছেন। মহিলা কলেজে বাঁশ দেওয়ার ঘটনা খুবই দুঃখজনক। আমি এ বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবো।’

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বন্যার পানি কমার সাথে সাথে জলবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে

কলেজের দেয়ালে রডের পরিবর্তে বাঁশ

আপডেট সময় ১১:৩৪:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ জুলাই ২০১৭

অাকাশ জাতীয় ডেস্ক:

বান্দরবান সরকারি মহিলা কলেজের দেয়ালে রডের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহার করা হচ্ছে। বুধবার (১৯ জুলাই) বিকালে বান্দরবান সরকারি কলেজের নির্মাণাধীন চারতলা ভবনের বারান্দায় ড্রপ ওয়ালে রডের ফাঁকে ফাঁকে এ বাঁশ ব্যবহার করতে দেখা যায়।পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ৮১ লাখ টাকার এ কাজটি করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইউএন এন্টারপ্রাইজের পক্ষে আওয়ামী লীগ নেতা ঠিকাদার উজ্জল বাবু।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, সরকারি মহিলা কলেজের ৪তলা ভবনের ড্রপ ওয়ালের নির্মাণ কাজে রডের পাশাপাশি চিকন করে কাটা বাঁশ ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রতিটি ধাপে একটি রড, একটি বাঁশ ধাপে ধাপে দেওয়া হচ্ছে। এভাবে প্রায় ২০০শ ফুটেরও বেশি এলাকা জুড়ে এ বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে।কলেজের শিক্ষার্থীরা জানায়, কয়েকদিন ধরে আমাদের কলেজের চারতলায় ভবনের কাজ চলছে। আজ সকাল থেকেই লেবাররা বড় বড় বাঁশ কেটে চিকন করছিল। বিকালে দেখি রডের ফাঁকে ফাঁকে ওই বাঁশগুলো রডের পরিবর্তে ব্যবহার করছে। তাদের দাবি, যদি ভবনটি একই ঠিকাদার করে থাকে তাহলে আরও একাধিক বাঁশ এ ভবনের ভেতরে থাকতে পারে।এ বিষয়ে নির্মাণ শ্রমিক আলী হোসেন বলেন, ‘রডের ভেতরে বাঁশ দিলে কাজটি অনেক শক্ত ও টেকসই হয়। তাই আমি বাঁশ ব্যবহার করছি। বিষয়টি ঠিকাদারও জানেন।’

তবে ঠিকাদার উজ্জল বাবু বলেন, ‘সিমেন্ট ভাল করে দেয়ালে লাগার জন্য আমার নির্মাণ শ্রমিক বাঁশ ব্যবহার করছিল। তবে এ বিষয়গুলো আমি জানতাম না। জানার পরপরই আমি আমার শ্রমিককে বাঁশ খুলে ফেলতে বলেছি। তবে যতটুকু রড ব্যবহার করার কথা ছিল তার থেকে কম রড ব্যবহার করা হয়নি।’ এ ব্যাপারে বান্দরবান সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রদীপ বড়ুয়া বলেন, ‘আমি কলেজে নাই। তবে আমি রডের পরিবর্তে বাঁশ দেবার কথা শুনে তাৎক্ষণিক ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে কথা বলেছি। ঠিকাদার যে কাজটি করেছে তা বড়ই অন্যায়। আমি কলেজে এসে অবশ্যই ব্যবস্থা নিব।’

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নুর হোসেন বলেন, ‘আমি চট্টগ্রাম এসেছি চিকিৎসার জন্য। তবে দীর্ঘদিন কলেজের ড্রপ ওয়ালের কাজ বন্ধ ছিল। কিন্তু কাজ শুরু করে বাঁশ কেন দিচ্ছে তা আমি জানি না। আমি আগামীকাল বান্দরবানে এসে খবর নিয়ে ব্যবস্থা নিব।’ কাজটি কে করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইউ এন এন্টারপ্রাইজের নামে কাজটি করছে আওয়ামী লীগ নেতা উজ্জল বাবু ও তাপস।

এ বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুল আজিজ উদ্দিন ভূইয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘উজ্জল বাবু সব কাজেই বেশি বাড়াবাড়ি শুরু করছেন। মহিলা কলেজে বাঁশ দেওয়ার ঘটনা খুবই দুঃখজনক। আমি এ বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবো।’