ঢাকা ০৬:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করলেই জনগণের প্রত্যাশা পূরণ সম্ভব হবে: ইশরাক ব্যাটিং ব্যর্থতায় টি-টোয়েন্টি সিরিজেও হোয়াইটওয়াশ হলো টাইগাররা ইসরাইল আঞ্চলিক ও বিশ্ব শান্তির সবচেয়ে বড় হুমকি: এরদোগান নিজ বাড়ির সামনে এক সাংবাদিককে কুপিয়ে হত্যা অপরাধ করলে রাজনৈতিক পরিচয় থাকলেও ছাড় দেওয়া হবে না: আইজিপি আগামী বছর রাশিয়ার সাথে যুদ্ধ শেষ হওয়ার প্রত্যাশা জেলেনস্কির সৌদি আরবের মক্কায় ভারী বৃষ্টির কারণে হঠাৎ বন্যা “আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গঠন করতে চাই, যেখানে সকল সম্প্রদায় ও নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত থাকবে” “ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মূল পরিকল্পনাকারী একমাত্র তারেক রহমান” অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পররাষ্ট্রনীতিতে আত্মসম্মানের উপর গুরুত্ব দেয় এবং নতজানু নীতিতে বিশ্বাস করে না,:উপদেষ্টা নাহিদ

হাজার হাজার চীনা সৈন্য তিব্বতে ঢুকছে

অাকাশ আর্ন্তজাতিক ডেস্ক:

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সংক্রান্ত বিবাদ চরমে ওঠায় এবার চূড়ান্ত পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে বেইজিং। ভারতের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ সামরিক প্রস্তুতি সেরে ফেলতে উদ্যোগী হল চীন। তিব্বত সীমান্তে হাজার হাজার সামরিক সরঞ্জাম, ফৌজ মোতায়েন করছে বেইজিং। জারি রয়েছে সড়ক ও রেলপথে আরও সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে আসার কাজও।

হংকং থেকে প্রকাশিক ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’ চীনা সেনার মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের নির্দেশে তিব্বতের উত্তরে কুনলুন পর্বতমালায় পাড়ি দিয়েছে প্রচুর চীনা সেনা। তাদের সঙ্গে রয়েছে ভারী অস্ত্রশস্ত্র।

ডোকা লা সীমান্তে যখন ভারত ও চীন – দুই দেশের সেনাই একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধংদেহী মনোভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে, এমন পরিস্থিতিতে এ ঘটনা দুই দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করল ।

সম্প্রতি দক্ষিণ পশ্চিম চীনের তিব্বতের মালভূমিতে ব্যাপক সামরিক মহড়া চালিয়েছে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)। আনুমানিক দশ হাজারের মতো সেনা এই ‘লাইভ’ ড্রিলে অংশ নেয়। মহড়ায় বিশ্বের বৃহত্তম সেনাবাহিনী কয়েকশত ট্রাক, প্রচুর হাউৎজার কামান, বিমান বিধ্বংসী কামান, বাঙ্কার বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র, মিসাইল লঞ্চিং প্যাড, রকেট লঞ্চিং প্যাড, শত্রুপক্ষের বিমান চিহ্নিতকারী রেডার ইউনিট, অ্যান্টি ট্যাঙ্ক গ্রেনেড, মোবাইল কমিউনিকেশন সিস্টেম ইত্যাদি ব্যবহার করে।

প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের অনুমান, সিকিম ও অরুণাচল সীমান্তে ভারতীয় সেনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে রসদ ও সেনা পাঠানোর ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নেবে এই দুটি ব্রিগেড। সেজন্যই তাদের দক্ষিণ তিব্বতে ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকায় মোতায়েন করা হয়েছে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, লালফৌজের (চীনা সৈন্যবাহিনী) এই বৃহত্তম মহড়ার বার্তা খুব স্পষ্ট। তা হল, চীনের কমিউনিস্ট পার্টি ও সরকার বড় কোনও সংঘর্ষ বা আগ্রাসনের পূর্ব প্রস্তুতি নিচ্ছে। কারণ ভারত ও ভুটান এককাট্টা হয়ে চীনের বিরুদ্ধে অনড় অবস্থান নিয়েছে।

এই অবস্থায় চীনের স্থলসেনার ‘মারমুখী মহড়া’ সিকিম নিয়ে অন্য ইঙ্গিত দিচ্ছে। এর আগে তিব্বতের রাজধানী লাসার কাছে এরকমই বড়সড় মহড়া চালিয়েছে চীনের স্থলসেনা। ঘন ঘন এই মহড়ায় ঠিক সেইসব অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামই ব্যবহার করা হয়েছে যেগুলি পার্বত্য যুদ্ধে শত্রুর হামলা প্রতিহত করতে ও শত্রুর জমি দখল করতে কৌশলগতভাবে কাজে লাগে। ফলে বেজিংয়ের এই মহড়া দুটির লক্ষ্য প্রতিবেশী জাপান, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান বা মঙ্গোলিয়া নয়। মহড়ার লক্ষ্য যে ভারত তা দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট।

তবে চুপ করে বসে নেই ভারতও। এযাবৎকালের মধ্যে বিশ্বের বৃহত্তম নৌমহড়ায় অংশ নিয়েছে ভারত, আমেরিকা ও জাপানের নৌবাহিনী। গত কয়েকদিন ধরে বঙ্গোপসাগরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মার্কিন বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস নিমিৎজ। সঙ্গে রয়েছে ভারতের বিমানবাহী বিশালাকায় যুদ্ধজাহাজ আইএনএস বিক্রমাদিত্য এবং জাপানি যুদ্ধজাহাজ জেএস ইজুমো। অংশ নিয়েছে তিন দেশের নৌবাহিনীর ১০০টি যুদ্ধবিমান। চেন্নাই থেকে ১০০ নটিক্যাল মাইল দূরে এই মহড়া চলছে।

পরে মহড়ার এলাকা বাড়িয়ে আন্দামান সাগরেও মহড়া চালানো হবে। ভারত ও মার্কিন নৌবাহিনীর পসেইডন এইট এ, পসেইডন এইট ওয়ান বিমান, মিগ ২৯ কে, সুখোই ৩০-সহ অনেক যুদ্ধবিমান অংশ নিয়েছে। জাপান নৌবাহিনীর নয়টি সাবমেরিন ধ্বংসকারী উন্নত হেলিকপ্টার এই মহড়ায় অংশ নিয়েছে। দক্ষিণ চীন সাগরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে জাপান, আমেরিকাসহ সাতটি দেশের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে জড়িয়েছে চীন। সেনকাকু দ্বীপ-সহ দুটি দ্বীপের দখল নিয়ে জাপানের সঙ্গে চীনের উত্তেজনা এখন চরমে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

হাজার হাজার চীনা সৈন্য তিব্বতে ঢুকছে

আপডেট সময় ০৪:৫৭:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ জুলাই ২০১৭

অাকাশ আর্ন্তজাতিক ডেস্ক:

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সংক্রান্ত বিবাদ চরমে ওঠায় এবার চূড়ান্ত পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে বেইজিং। ভারতের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ সামরিক প্রস্তুতি সেরে ফেলতে উদ্যোগী হল চীন। তিব্বত সীমান্তে হাজার হাজার সামরিক সরঞ্জাম, ফৌজ মোতায়েন করছে বেইজিং। জারি রয়েছে সড়ক ও রেলপথে আরও সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে আসার কাজও।

হংকং থেকে প্রকাশিক ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’ চীনা সেনার মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের নির্দেশে তিব্বতের উত্তরে কুনলুন পর্বতমালায় পাড়ি দিয়েছে প্রচুর চীনা সেনা। তাদের সঙ্গে রয়েছে ভারী অস্ত্রশস্ত্র।

ডোকা লা সীমান্তে যখন ভারত ও চীন – দুই দেশের সেনাই একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধংদেহী মনোভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে, এমন পরিস্থিতিতে এ ঘটনা দুই দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করল ।

সম্প্রতি দক্ষিণ পশ্চিম চীনের তিব্বতের মালভূমিতে ব্যাপক সামরিক মহড়া চালিয়েছে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)। আনুমানিক দশ হাজারের মতো সেনা এই ‘লাইভ’ ড্রিলে অংশ নেয়। মহড়ায় বিশ্বের বৃহত্তম সেনাবাহিনী কয়েকশত ট্রাক, প্রচুর হাউৎজার কামান, বিমান বিধ্বংসী কামান, বাঙ্কার বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র, মিসাইল লঞ্চিং প্যাড, রকেট লঞ্চিং প্যাড, শত্রুপক্ষের বিমান চিহ্নিতকারী রেডার ইউনিট, অ্যান্টি ট্যাঙ্ক গ্রেনেড, মোবাইল কমিউনিকেশন সিস্টেম ইত্যাদি ব্যবহার করে।

প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের অনুমান, সিকিম ও অরুণাচল সীমান্তে ভারতীয় সেনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে রসদ ও সেনা পাঠানোর ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নেবে এই দুটি ব্রিগেড। সেজন্যই তাদের দক্ষিণ তিব্বতে ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকায় মোতায়েন করা হয়েছে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, লালফৌজের (চীনা সৈন্যবাহিনী) এই বৃহত্তম মহড়ার বার্তা খুব স্পষ্ট। তা হল, চীনের কমিউনিস্ট পার্টি ও সরকার বড় কোনও সংঘর্ষ বা আগ্রাসনের পূর্ব প্রস্তুতি নিচ্ছে। কারণ ভারত ও ভুটান এককাট্টা হয়ে চীনের বিরুদ্ধে অনড় অবস্থান নিয়েছে।

এই অবস্থায় চীনের স্থলসেনার ‘মারমুখী মহড়া’ সিকিম নিয়ে অন্য ইঙ্গিত দিচ্ছে। এর আগে তিব্বতের রাজধানী লাসার কাছে এরকমই বড়সড় মহড়া চালিয়েছে চীনের স্থলসেনা। ঘন ঘন এই মহড়ায় ঠিক সেইসব অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামই ব্যবহার করা হয়েছে যেগুলি পার্বত্য যুদ্ধে শত্রুর হামলা প্রতিহত করতে ও শত্রুর জমি দখল করতে কৌশলগতভাবে কাজে লাগে। ফলে বেজিংয়ের এই মহড়া দুটির লক্ষ্য প্রতিবেশী জাপান, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান বা মঙ্গোলিয়া নয়। মহড়ার লক্ষ্য যে ভারত তা দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট।

তবে চুপ করে বসে নেই ভারতও। এযাবৎকালের মধ্যে বিশ্বের বৃহত্তম নৌমহড়ায় অংশ নিয়েছে ভারত, আমেরিকা ও জাপানের নৌবাহিনী। গত কয়েকদিন ধরে বঙ্গোপসাগরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মার্কিন বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস নিমিৎজ। সঙ্গে রয়েছে ভারতের বিমানবাহী বিশালাকায় যুদ্ধজাহাজ আইএনএস বিক্রমাদিত্য এবং জাপানি যুদ্ধজাহাজ জেএস ইজুমো। অংশ নিয়েছে তিন দেশের নৌবাহিনীর ১০০টি যুদ্ধবিমান। চেন্নাই থেকে ১০০ নটিক্যাল মাইল দূরে এই মহড়া চলছে।

পরে মহড়ার এলাকা বাড়িয়ে আন্দামান সাগরেও মহড়া চালানো হবে। ভারত ও মার্কিন নৌবাহিনীর পসেইডন এইট এ, পসেইডন এইট ওয়ান বিমান, মিগ ২৯ কে, সুখোই ৩০-সহ অনেক যুদ্ধবিমান অংশ নিয়েছে। জাপান নৌবাহিনীর নয়টি সাবমেরিন ধ্বংসকারী উন্নত হেলিকপ্টার এই মহড়ায় অংশ নিয়েছে। দক্ষিণ চীন সাগরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে জাপান, আমেরিকাসহ সাতটি দেশের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে জড়িয়েছে চীন। সেনকাকু দ্বীপ-সহ দুটি দ্বীপের দখল নিয়ে জাপানের সঙ্গে চীনের উত্তেজনা এখন চরমে।