অাকাশ জাতীয় ডেস্ক:
প্রেমিকার স্বীকারোক্তি মোতাবেক নিখোঁজের প্রায় চার মাস পর জাকিরুল ইসলাম(২২) নামে এক যুবকের পুতে রাখা গলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার রংপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের শ্যামপুর এলাকার ধান ক্ষেত থেকে লাশটি উদ্ধার করে। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা হলেন,প্রেমিকা জাকিয়া সুলতানা জান্নাতি, তার বাবা জাকির হোসেন, চাচা সিরাজুল ইসলাম ও তাহারুল ইসলাম।
মামলা সূত্রে জানা যায়, রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের শ্যামপুর এলাকার দর্জি জাকিরুলের সাথে একই এলাকার জাকির হোসেনের স্কুলপড়ুয়া মেয়ে জাকিয়া সুলতানা জান্নাতির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি মেয়ের প্রভাবশালী বাবা মেনে নিতে পারেননি। এরইমধ্যে ছেলেকে নানাভাবে হুমকি ধামকি দেওয়া হয়। কিন্তু জাকিরুল প্রেমের সম্পর্ক নষ্ট করতে রাজি হয় না। পরে মেয়ের বাবা জাকিরুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী গত ১৯ মার্চ জাকিরুল ইসলামকে মেয়ের বাড়িতে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর লাশ বস্তায় ভরে বাড়ি থেকে কিছুদূর একটি ধান ক্ষেতে পুতে রাখা হয়।
নিহতের স্বজনরা জানান, জাকিরুলের খোঁজ না পেয়ে তার বাবা আজাদ আলী বদরগঞ্জ থানায় মামলা করতে যান। কিন্তু ওসি আখতারুজ্জামান প্রধান মামলা না নিয়ে বলেন, ছেলে-মেয়ে পালিয়ে গিয়ে হয়ত বিয়ে করে সুখে রয়েছে। তাই মামলা করার প্রয়োজন নেই। ওসি মামলা না নেওয়ায় আজাদ আলী ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য রংপুর পিবিআইকে দেন। পিবিআই তদন্তের পর জানতে পারেন ঘটনার পর পরই সবাই চট্রগ্রামে পালিয়ে গেছেন।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে ওই মামলার কয়েক আসামি গোপনে বদরগঞ্জে আসেন। এ খবর জানতে পেরে ওই রাতেই পিবিআই সদস্যরা প্রেমিকা জাকিয়া সুলতানা জান্নাতিকে গ্রেফতার করে। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক পঞ্চগড়ে পালিয়ে যাবার পথে তার বাবা জাকির হোসেন, চাচা সিরাজুল ইসলাম ও তাহারুল ইসলামকে গ্রেফতার করেন। জিজ্ঞাসাবাদে প্রেমিকাসহ সবাই জাকিরুল ইসলামকে হত্যার কথা স্বীকার করে লাশ কোথায় আছে জানায়। পরে শুক্রবার পিবিআই সদস্যরা মাটি খুঁড়ে গলিত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
জাকিরুল ইসলামের বাবা আজাদ আলী বলেন, আমার নির্দোষ ছেলেটিকে প্রভাবশালী জাকির হোসেন ও তার ভাইরা ডেকে নিয়ে হত্যার পর লাশটি পুঁতে রাখে। বিষয়টি আমি বার বার বদরগঞ্জ থানার ওসিকে বলার পরও তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি। এমনকি আমার মামলাটি পর্যন্ত গ্রহণ করেননি। অবশেষে আমি আদালতে গিয়ে মামলা করি। আমি আমার ছেলে হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।
পিবিআই রংপুরের সহকারি পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার জানান, গ্রেফতাররা হত্যা বিষয়টি শিকার করেছে। এ হত্যাকাণ্ডে আরও যারা জড়িত তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।