ঢাকা ০৬:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সৌদি আরবের সদ্য পদচ্যুত যুবরাজ নায়েফ গৃহবন্দি

অাকাশ আর্ন্তজাতিক ডেস্ক:

সৌদি আরবের সদ্য পদ হারানো যুবরাজ মোহাম্মদ বিন নায়েফের উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তাকে উপকূলীয় শহর জিদ্দায় নিজ প্রাসাদে ‘গৃহবন্দি’ করে রাখা হয়েছে।সৌদি রাজ পরিবারের ঘনিষ্ঠ মার্কিন সাবেক চার কূটনীতিকের বরাতে এমন দাবি করেছে নিউইয়র্ক টাইমস।মোহাম্মদ বিন নায়েফ (৫৭) ছিলেন বর্তমান সৌদি বাদশা সালমানের ভাতিজা। যুবরাজ হিসেবে তারই দেশটির পরবর্তী বাদশাহ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সালমান ভাতিজাকে সরিয়ে নিজের প্রিয় ছেলে মোহাম্মদ বিন সালমানকে (৩১) যুবরাজ মনোনীত করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা বলেন, নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়া মোহাম্মদ বিন নায়েফ গত সপ্তাহ নাগাদ সৌদি অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু নতুন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সম্ভাব্য কোনো ধরনের বিরোধিতার সুযোগও রাখতে চান না।ঠিক কতদিন নায়েফের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে তা পরিষ্কার নয়। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ ধরনের খবরকে ‘ভিত্তিহীন ও মিথ্যা’ বলে জানিয়েছেন।মোহাম্মদ বিন নায়েফকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও সরিয়ে দেয়া হয়েছিল। ওই পদে থেকে রাজতন্ত্র বিরোধীদের নিপীড়ন এবং আল-কায়েদা বিরোধী অভিযানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে খুবই প্রিয় ছিলেন তিনি।

মোহাম্মদ বিন সালমানকে যুবরাজ নিয়োগে উচ্ছ্বসিত তার সমর্থকরা। তাকে ‘এমবিএস’ নামে সম্বোধন করে তারা। তবে জ্যেষ্ঠ প্রিন্সের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ প্রমাণ করে এ সিদ্ধান্তে রাজ পরিবারের অনেকেরই আপত্তি আছে।

মার্কিন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এটা প্রমাণ করে যে, এমবিএস চান না তার কোনো বিরোধী থাকুক। রাজ পরিবার থেকে নেপথ্যে কোনো কিছু ঘটুক সেটাও তিনি চান না। কোনো ধরনের বিরোধিতা ছাড়াই সোজা পথে এগিয়ে যেতে যান তিনি, যাতে মোহাম্মদ বিন নায়েফ কোনোভাবে কোনো ষড়যন্ত্র করতে না পারেন।’ এই কর্মকর্তা আরো জানান, মার্কিন সরকার সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা এখন পর্যন্ত মোহাম্মদ বিন নায়েফের সঙ্গে কোনো আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ করতে পারেননি। তার খুব কাছ থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। জ্যেষ্ঠ ওই মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ‘মোহাম্মদ বিন নায়েফ আমাদের এমন এক মহান বন্ধু ও অংশীদার ছিলেন, আমরা চাই না তার সঙ্গে এমন অসুন্দর ও অমার্জিত আচরণ হোক।’

মোহাম্মদ বিন নায়েফকে বাদশাহির উত্তরাধিকারী থেকে সরিয়ে দেয়ার পর থেকে তার সঙ্গে যে আচরণ করা হচ্ছে এতে যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবিরোধী এবং গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ব্যক্তিগতভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা এই যুবরাজের সঙ্গে কাজ করেছিলেন। কিন্তু বাদশাহ সালমান ও তার ছেলে মোহাম্মদ বিন সালমানকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার জামাতা জারেড কুশনার শক্তভাবে সমর্থন করায় তারা এ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বন্যার পানি কমার সাথে সাথে জলবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে

সৌদি আরবের সদ্য পদচ্যুত যুবরাজ নায়েফ গৃহবন্দি

আপডেট সময় ০২:২৬:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ জুলাই ২০১৭

অাকাশ আর্ন্তজাতিক ডেস্ক:

সৌদি আরবের সদ্য পদ হারানো যুবরাজ মোহাম্মদ বিন নায়েফের উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তাকে উপকূলীয় শহর জিদ্দায় নিজ প্রাসাদে ‘গৃহবন্দি’ করে রাখা হয়েছে।সৌদি রাজ পরিবারের ঘনিষ্ঠ মার্কিন সাবেক চার কূটনীতিকের বরাতে এমন দাবি করেছে নিউইয়র্ক টাইমস।মোহাম্মদ বিন নায়েফ (৫৭) ছিলেন বর্তমান সৌদি বাদশা সালমানের ভাতিজা। যুবরাজ হিসেবে তারই দেশটির পরবর্তী বাদশাহ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সালমান ভাতিজাকে সরিয়ে নিজের প্রিয় ছেলে মোহাম্মদ বিন সালমানকে (৩১) যুবরাজ মনোনীত করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা বলেন, নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়া মোহাম্মদ বিন নায়েফ গত সপ্তাহ নাগাদ সৌদি অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু নতুন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সম্ভাব্য কোনো ধরনের বিরোধিতার সুযোগও রাখতে চান না।ঠিক কতদিন নায়েফের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে তা পরিষ্কার নয়। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ ধরনের খবরকে ‘ভিত্তিহীন ও মিথ্যা’ বলে জানিয়েছেন।মোহাম্মদ বিন নায়েফকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও সরিয়ে দেয়া হয়েছিল। ওই পদে থেকে রাজতন্ত্র বিরোধীদের নিপীড়ন এবং আল-কায়েদা বিরোধী অভিযানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে খুবই প্রিয় ছিলেন তিনি।

মোহাম্মদ বিন সালমানকে যুবরাজ নিয়োগে উচ্ছ্বসিত তার সমর্থকরা। তাকে ‘এমবিএস’ নামে সম্বোধন করে তারা। তবে জ্যেষ্ঠ প্রিন্সের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ প্রমাণ করে এ সিদ্ধান্তে রাজ পরিবারের অনেকেরই আপত্তি আছে।

মার্কিন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এটা প্রমাণ করে যে, এমবিএস চান না তার কোনো বিরোধী থাকুক। রাজ পরিবার থেকে নেপথ্যে কোনো কিছু ঘটুক সেটাও তিনি চান না। কোনো ধরনের বিরোধিতা ছাড়াই সোজা পথে এগিয়ে যেতে যান তিনি, যাতে মোহাম্মদ বিন নায়েফ কোনোভাবে কোনো ষড়যন্ত্র করতে না পারেন।’ এই কর্মকর্তা আরো জানান, মার্কিন সরকার সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা এখন পর্যন্ত মোহাম্মদ বিন নায়েফের সঙ্গে কোনো আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ করতে পারেননি। তার খুব কাছ থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। জ্যেষ্ঠ ওই মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ‘মোহাম্মদ বিন নায়েফ আমাদের এমন এক মহান বন্ধু ও অংশীদার ছিলেন, আমরা চাই না তার সঙ্গে এমন অসুন্দর ও অমার্জিত আচরণ হোক।’

মোহাম্মদ বিন নায়েফকে বাদশাহির উত্তরাধিকারী থেকে সরিয়ে দেয়ার পর থেকে তার সঙ্গে যে আচরণ করা হচ্ছে এতে যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবিরোধী এবং গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ব্যক্তিগতভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা এই যুবরাজের সঙ্গে কাজ করেছিলেন। কিন্তু বাদশাহ সালমান ও তার ছেলে মোহাম্মদ বিন সালমানকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার জামাতা জারেড কুশনার শক্তভাবে সমর্থন করায় তারা এ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না।